কারাগার থেকে পালানো ৭৯ ‘জঙ্গি’ এখনো পলাতক, তাঁদের ৯ জন সাজাপ্রাপ্ত
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কারাগারে হামলা ও কারাবন্দীদের বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিভিন্ন কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের মধ্যে এখনো পলাতক যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আছেন ৯৮ জন। পলাতক বন্দীদের মধ্যে জঙ্গি–সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭৯ জন আছেন। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি আছেন ৯ জন।
আজ মঙ্গলবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অবস্থিত কারা অধিদপ্তরের মিলনায়তনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, অস্থিরতার ওই সময়ে আটটি কারাগার থেকে অস্ত্র লুট হয়েছিল ৯৪টি। এর মধ্যে ৬৫টি উদ্ধার করা হয়েছে। বন্দী পালানোর ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ৬২২ মামলায় ১৫ হাজার ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। তাঁরা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পান। বর্তমান সরকার ওই ৬২২ মামলা প্রত্যাহার করেছে। এ ছাড়া ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত ৪৩ মামলার আসামি ও শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
কারা অধিদপ্তর ও কারাগারগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সংস্কার শুরু হয়েছে জানিয়ে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, সৎ, দক্ষ ও যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এখন পদায়ন করা হচ্ছে। তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাঁরা ঘুরেফিরে একই কর্মস্থলে ছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অন্য সংস্থার সহযোগিতায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত হচ্ছে।
কারা মহাপরিদর্শক জানান, বন্দী ও কারারক্ষী অনেকেই মাদকাসক্ত। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহিষ্ণুতা) গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে এক কারারক্ষীকে মাদকসহ পাওয়া যাওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কারাগারে যাতে মাদক ঢুকতে না পারে, সে বিষয়ে কারাফটকে প্রতিনিয়ত তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কারাগার মাদকশূন্য করার জন্য ধাপে ধাপে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ করে শূন্যে নিয়ে আসা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মিলিয়ে ৩৭ জন কারাগারে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জন ডিভিশন–সুবিধা পেয়েছেন।