কেবিনে ঢুকে খালেদা জিয়ার ছবি তুলতে চেয়েছিলেন গ্রেপ্তার সেই যুবক

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কেবিনে ঢোকার চেষ্টাকালে আটক সুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছেছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের ছেলে সুজন পাল একসময় ছাত্রদল করতেন। দুই মাস ধরে তিনি ঢাকায় এসে একটি মেসে থাকছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কাছে থেকে একনজর দেখার ইচ্ছা ছিল তাঁর। সে কারণে তিনি বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়ে সেখানে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার কেবিনে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। নেত্রীর একটি ছবি তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে সুজন এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

৩৪ বছর বয়সী সুজন পাল ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়ার কেবিনে ঢোকার চেষ্টাকালে তাঁকে আটক করে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁকে ভাটারা থানায় সোপর্দ করা হয়। আদালতের অনুমতিতে সুজনকে তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভাটারা থানা–পুলিশ। বৃহস্পতিবার আবার আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

আজ শুক্রবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রিমান্ডে সুজন পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, তাঁর বাড়ি ফরিদপুরের সদরপুরের চরচাঁদপুরে। তিনি দুই মাস ধরে ঢাকার একটি মেসে থাকেন। খালেদা জিয়াকে কাছে থেকে একনজর দেখার খুব ইচ্ছা ছিল তাঁর। সেদিন তিনি খালেদা জিয়ার ছবি তুলতে তাঁর কেবিনে ঢুকতে চেয়েছিলেন। এর আগেও একবার খালেদা জিয়াকে দেখতে তিনি এই হাসপাতালে এসেছিলেন।

ওসি মাইনুল ইসলাম জানান, সুজন বেকার। গ্রামের বাড়ি থেকে টাকা এনে তা দিয়ে চলতেন।

জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের বাড্ডা অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রাজন কুমার সাহা প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সুজন পাল পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেছেন, ২০১৮ সালের আগে পর তিনি ছাত্রদল করতেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির একজন সমর্থক।

আরও পড়ুন

সুজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানায় মাদকের একটি মামলা হয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা রাজন। তিনি বলেন, পরিবার বলেছে সুজন মানসিক ভারসাম্যহীন। এ জন্য তাঁরা সুজনকে পাবনা ও ফরিদপুরের মানসিক রোগবিশেষজ্ঞ দুই চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন। তাঁর পরিবার সেই কাগজপত্র পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়েছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় সুজনের কথা অসংলগ্ন ছিল।

সুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রাজন কুমার। আদালতে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে সুজন পালকে কারাগারে আটক রাখার সুপারিশ করে বলা হয়েছে, তিনি জামিনে মুক্তি পেলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে।

লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ৯ আগস্ট থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে অপরিচিত একজন তাঁর কেবিনে ঢোকার চেষ্টায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিএনপি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার কেবিনে অপরিচিত ও সন্দেহভাজন যুবকের প্রবেশের চেষ্টা গভীর উদ্বেগজনক। হাসপাতালের মতো নিরাপদ জায়গায় থাকলেও তাঁর (খালেদা জিয়া) নিরাপত্তাব্যবস্থা কেন এত দুর্বল, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন এই নেতা।

আরও পড়ুন