ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি
চার পুলিশসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা, পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ আদালতের
চট্টগ্রামে হাসপাতালের এক কর্মকর্তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো ও ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা হয়েছে।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেন নগরের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ওয়ার্ডমাস্টার কামরুল ইসলাম।
বাদীর বক্তব্য শুনে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার আসামিরা হলেন—নগরের বন্দর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া ও কে এম জান্নাত সজল, নগর গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক এস আই মঙ্গল বিকাশ চাকমা, বন্দর এলাকার বাসিন্দা জামাল ফরাজী ও মিলন ফরাজী।
মহিউদ্দিন বর্তমানে নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। মঙ্গল বিকাশ এখন সিলেটে কর্মরত। অপর দুই পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল ও জান্নাতের বর্তমান কর্মস্থল–সম্পর্কিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
বাদীর আইনজীবী জুয়েল দাস প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ কর্মকর্তাদের সহায়তায় তাঁর মক্কেলকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। কিন্তু পরে তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি পান। আজ আদালত বাদীর বক্তব্য শুনে নালিশি মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নালিশি মামলায় বাদী বলেন, তিনি একটি মাল্টিপারপাস কোম্পানিতে টাকা জমা রাখেন। সেখান থেকে আট লাখ টাকা ফেরত চাইলে পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তাঁকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়। বন্দর থানার একটি চুরির মামলায় ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে নগরের আগ্রাবাদের হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে পুরো শহর ঘোরানো হয়। ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে তাঁর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে তাঁকে এই মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি পাঁচ দিন পর কারাগার থেকে মুক্তি পান। তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন বন্দর থানার সাবেক ওসি মহিউদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চুরির মামলার এজাহারে নাম থাকায় কামরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তদন্তে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় পুলিশ। যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে গ্রেপ্তারের পর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।