দাবার বোর্ড নিয়ে ঝগড়া থেকে কলেজছাত্রকে হত্যা করেন সহপাঠী, পরে গ্রেপ্তার: র্যাব
ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র জুবায়ের হাসান রাফিত হত্যায় জড়িত অভিযোগে তাঁর সহপাঠী চৌধুরী রাজিন ইকবালকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। গতকাল রোববার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব বলছে, দাবার বোর্ড নিয়ে ঝগড়ার জেরে রাজিন ইকবাল বাসায় ডেকে সহপাঠী জুবায়েরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোমেলো কুপিয়ে হত্যা করেন। ছেলেকে পালাতে সাহায্য করেছেন রাজিনের বাবা।
গত শনিবার রাতে মিরপুর কমার্স কলেজের পাশের স্টাফ কোয়ার্টারের একটি ভবনের তৃতীয় তলায় রাজিনের বাসা থেকে জুবায়েরের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। সেখানে রাজিন ও তাঁর বাবা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন।
আজ সোমবার র্যাব-৪–এর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজিনের কাছ থেকে কলেজের শিক্ষকেরা একটি দাবার বোর্ড বাজেয়াপ্ত করেন। পরে রাজিন নিজেকে কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থী দাবি করে কলেজের উপদেষ্টা বরাবর দাবার বোর্ডটি ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করেন।
জুবায়ের ওই শ্রেণির ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলেন। রাজিনের আবেদনে ক্লাসের নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে কলেজের শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় জুবায়েরের সঙ্গে রাজিনের বিবাদ মীমাংসা করা হয়। এতে রাজিন ক্ষুব্ধ হন এবং জুবায়েরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার বিকেলে রাজিন কৌশলে জুবায়েরকে কমার্স কলেজের পাশে তাঁদের ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। সেখানে আগের বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মধ্যে পুনরায় বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাজিন ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে জুবায়েরকে হত্যা করেন।
রাজিন ঘটনাটি তাঁর বাবাকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি জানার আগেই তিনি রাজিনকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন বলেও র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জুবায়েরের লাশ সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জেনে গেলে রাজিনের বাবা নিজেও কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এবং ছেলের সঙ্গে দেখা করেন। একটি মাইক্রোবাসে করে এরপর তিনি ছেলেকে নিয়ে হবিগঞ্জে পালিয়ে যান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাজিনকে রেখে তিনি অন্যত্র আত্মগোপনে চলে যান।
নিহত জুবায়েরের বাবার নাম আবুল বাসার বাদশা। তিনি আড়াইহাজার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে জুবায়ের ছিলেন সবার বড়।