শিশু আয়াতকে ছয় টুকরা করে হত্যা: আসামির মা-বাবা রিমান্ডে
চট্টগ্রামে পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতকে হত্যা করে খণ্ডিত দেহ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার আসামির মা-বাবার তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তাঁরা হলেন—আসামি আবির মিয়ার বাবা আজহারুল ইসলাম ও মা আলো বেগম। আজ মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
গতকাল সোমবার নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে আবিরের মা-বাবা ও এক বোনকে আটক করা হয়। আজ এই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী সেলিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আবিরের মা ও বাবাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখান আদালত।
পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আবিরের বোনকে শিশু আদালত গ্রেপ্তার দেখান। পিবিআই তার রিমান্ডের আবেদন করলে শিশু আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল আবিরের দ্বিতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাঁকে পিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একই সঙ্গে আবিরের বাসা ও সাগর পাড়ে লাশের খণ্ডিত অংশ উদ্ধারে কাজ চলছে বলে জানান পিবিআই পরিদর্শক ইলিয়াস খান।
আবিরের বাবা ভ্যানচালক আজহারুল ইসলাম আয়াতদের বাসায় ভাড়া থাকেন। মা আলো বেগম একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
পুলিশ বলছে, মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশু আয়াতকে অপহরণ করেছিলেন আবির। মুক্তিপণে ছয় থেকে সাত লাখ টাকা দাবি করার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। আবিরের মুঠোফোন কাজ না করায় অপহরণের মুক্তিপণ দাবি করতে পারেননি বলে তিনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানান। এরপর শিশুটি চিৎকার করতে চাইলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। পরে তার দেহ ছয় টুকরা করে সাগরে ভাসিয়ে দেন।
১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা ওয়াজ মুন্সিবাড়ি এলাকার সোহেল রানার মেয়ে আয়াত বাসার পাশে একটি মক্তবে পড়তে যাওয়ার সময় তাকে অপহরণ করেন আবির। আয়াতের বাবা স্থানীয় একটি মুদিদোকানের মালিক।
আয়াতকে তাঁরা খোঁজে না পেয়ে ইপিজেড থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
ইপিজেড থানার আকমল আলী রোড এলাকা থেকে আবিরকে ২৫ নভেম্বর আটক করে পুলিশ। তিনি সেখানে তাঁর মা আলো বেগমের বাসায় গিয়েছিলেন। তাঁর বাবা আজহারুল ইসলামের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর আলো বেগম আকমল আলী রোড এলাকায় থাকেন। আবিরের মা ও বাবা দুজনের সঙ্গেই যোগাযোগ রয়েছে। তিনি এখন বেকার।