ব্যবসার আড়ালে মাদকের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিলেন তাঁরা: র্যাব
টেলিভিশন ও গাড়ির পার্টসের ব্যবসা তাঁদের। এর আড়ালে গড়ে তোলা হয় মাদকদ্রব্য বিপণন নেটওয়ার্ক। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানির পর ধরা পড়েছে চক্রটির ৩৭ কোটি টাকা মূল্যের বিদেশি মদ ও কোটি টাকার দেশি–বিদেশি মুদ্রা। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মালবাহী কনটেইনারে করে শুল্ক ও কর ফাঁকি দেওয়া মাদকদ্রব্য পরিবহন করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হচ্ছিল—এমন তথ্য ছিল র্যাবের হাতে। এর ভিত্তিতে গতকাল শনিবার নারায়ণগঞ্জ এলাকায় তল্লাশিচৌকি বসিয়ে মালবাহী ট্রাক ও কনটেইনারে তল্লাশি করেন র্যাব-১১–এর সদস্যরা। এ সময় দুটি কনটেইনার থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গতকাল ও আজ ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন আবদুল আহাদ (২২), মো. নাজমুল মোল্লা (২৩) ও সাইফুল ইসলাম (৩৪)।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ টাকা, ১৫ হাজার ৯৩৫ নেপালি রুপি, ২০ হাজার ১৪৫ ভারতীয় রুপি, ১১ হাজার ৪৪৩ চীনা ইউয়ান, ৪ হাজার ২৫৫ ইউরো, ৭ হাজার ৪৪০ থাই বার্থ, ৯ সিঙ্গাপুর ডলার ও ১৫ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি সি অ্যান্ড এফের যোগসাজশে অবৈধ মাদক আমদানি করে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা বিভিন্ন কোম্পানির কাগজপত্র ব্যবহার করেন। তাঁরা মূলত দেশে টিভি ও গাড়ির পার্টসের ব্যবসার আড়ালে অবৈধ মাদকদ্রব্য বিপণন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, গতকালের নারায়ণগঞ্জে অভিযানের সূত্র ধরে ঢাকার ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে অবৈধ মাদক আমদানির সঙ্গে জড়িত নাজমুল মোল্লা ও সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই অভিযানের সূত্র ধরে আজ সকালে বিমানবন্দর এলাকা থেকে চক্রের মূল হোতা আবদুল আহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, আবদুল আহাদ ও মিজানুর রহমান আশিক সম্পর্কে আপন ভাই। এক বছর ধরে তাঁরা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা অবৈধ মাদক বিদেশ থেকে এনে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, রাজধানীর বংশাল ও ওয়ারীতে ওয়্যারহাউসে রাখেন। সেখান থেকে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হয়।