চুরির ভাগের টাকায় বিয়ে, ভাই-দাদির কুলখানি
বরিশালের বাকেরগঞ্জের যুবক মো. সালাম একজন পেশাদার চোর। তিন মাস আগে রাজধানীর ডেমরার ডগাইর এলাকার একটি বাসার তালা ভেঙে ১৪ লাখ টাকা চুরি করেন তিনি। সেই টাকা গুরু মরণ চাঁদের কাছে নিয়ে গেলে সালাম ভাগ পান পাঁচ লাখ টাকা। এরপর গ্রামে চলে যান সালাম। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি।
চুরির তিন মাস পর ৮ জানুয়ারি ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা থেকে সালাম এবং তাঁর গুরু মরণ চাঁদকে ডেমরার সারুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছেন সালাম। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, এরপর পুলিশের ভয় দেখিয়ে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে ওই গুরুর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। অর্থাৎ মোট ৭ লাখ টাকা ভাগ পান সালাম। এ টাকার একটি অংশ তিনি খরচ করেন নিজের বিয়েতে। জমি ও আসবাব কেনায় খরচ করেন কিছু টাকা। মৃত বড় ভাই ও দাদির ‘কুলখানির’ নাম করে গ্রামের ৩০০ মানুষকে ভূরিভোজ করান তিনি। বাকি টাকা ‘বিনিয়োগ’ করেন মাদক ব্যবসায়।
পুলিশ জানায়, মরণ চাঁদও একজন পেশাদার চোর। তাঁর দৃশ্যমান পেশা হচ্ছে রাস্তার পাশে তিনি অস্থায়ী দোকানে চা বিক্রি করেন। মূলত একটি নির্দিষ্ট এলাকায় রেকি করার জন্যই অস্থায়ী চায়ের দোকান দেন তিনি। সাত থেকে আট বছর আগে চায়ের দোকানেই মরণ চাঁদের সঙ্গে সালামের পরিচয় হয়। নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হলে একসঙ্গে চুরির পরিকল্পনা করেন তাঁরা। পাঁচ বছর ধরে তাঁরা একই সঙ্গে বসবাস করেন। তালা ভেঙে ফাঁকা বাসায় চুরির কৌশল মরণের কাছ থেকেই শেখেন সালাম। এ কারণে মরণ চাঁদকে তিনি গুরু বলে সম্বোধন করেন।
ডেমরার ডগাইরের বাসিন্দা ব্যাংকার শহীদুল ইসলামের বাসা থেকে ২০ লাখ টাকা চুরি হয় উল্লেখ করে গত ২৩ নভেম্বর ডেমরা থানায় একটি মামলা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, চুরির ঘটনাটি ঘটেছে ১৩ অক্টোবর। প্রযুক্তিগত তদন্তের ভিত্তিতে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয় সালামকে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরণ চাঁদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডেমরা অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মধুসূদন দাস প্রথম আলোকে বলেন, চুরির টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারার
পর বিয়ে করতে সালাম যান গ্রামে। আর মরণ চাঁদ ডেমরা এলাকা ছেড়ে চলে যান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায়। সেখানে তিনি একটি খাবারের
দোকান দেন।