ঢাকা থেকে অপহৃত শিশুকে আট দিন পর কুমিল্লা থেকে উদ্ধার
রাজধানীর হাজারীবাগ থানা এলাকা থেকে অপহৃত হওয়ার আট দিন পর আড়াই বছরের শিশু তাওসীনকে গতকাল বুধবার কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে মুক্তিপণের সাড়ে ২৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সুলতানা আক্তার ওরফে নেহা, মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. শাহজাহান।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতিদিনের মতো ২১ মার্চ সকালে স্ত্রী ও সন্তানদের বাসায় রেখে রিকশা চালাতে বের হন হাজারীবাগের ঝাউচর এলাকার নুরুল ইসলাম। বিকেল সোয়া চারটার দিকে তার ছয় বছরের মেয়ে তাবাসসুমের সঙ্গে ছেলে তাওসীন বাসার সামনে খেলতে যায়। তারা খেলার সময় তাদের পাশে বসেছিলেন তাদের নানি লুৎফুন নাহার।
ডিবির প্রধান বলেন, কিছুক্ষণ পর একজন বোরকা পরা অজ্ঞাতনামা এক নারী লুৎফুন নাহারকে জিজ্ঞাসা করেন, এরা আপনার কী হয়। পরিচয় জেনে ওই নারী চলে যান। নাতি–নাতনিদের খেলায় রেখে লুৎফুন নাহার পাশেই নিজের বাসায় যান। এই সুযোগে ওই বোরকা পরা নারী এসে দুজনের হাতে দুই প্যাকেট চিপস দেন। এরপর ওই নারী সুযোগ বুঝে শিশু তাওসীনকে কোলে নিয়ে সটকে পড়েন।
হারুন অর রশিদ বলেন, পরে শিশুটির বোন তাবাসসুম তার মাকে জানায়, একজন নারী তার ছোট ভাইকে নিয়ে যাচ্ছে। এ কথা শুনে তাদের মা দ্রুত বাসার সামনে যায় এবং ওই নারীসহ ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি। ছেলেটির সন্ধানে এলাকায় মাইকিংও করা হয়। শিশুটির বাবা নুরুল ইসলাম পরের দিন হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, হাজারীবাগ থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি রমনা বিভাগ মামলাটির তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে তারা অপহরণকারীদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন। পরে গতকাল সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই ও বরুড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে অপহৃত শিশু তাওসীনকে উদ্ধার করে।
ডিবি কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তার করা সুলতানা আক্তার ও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম শিশু তাওসীনকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকায় শাহজাহানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। অপহরণকারী চক্রটির কাছ থেকে শিশু বিক্রির ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের কালো বোরকা পরা নারীরা শিশু চুরির উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়ায়। এরা অভিভাবক ছাড়া কোনো ছোট শিশুকে পাওয়া মাত্রই তাদের চিপস, আইসক্রিম ও চকলেট দিয়ে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।