জঙ্গি ছিনতাইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি শনাক্ত: সিটিটিসি–প্রধান
ঢাকার আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তি এবং তাঁর কয়েক সহযোগীকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় মামলার অগ্রগতি জানাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, তাঁরা এসব জঙ্গির পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি সংগঠনটির জন্য ‘খুব গুরুত্বপূর্ণ’ হওয়ায় তাঁদের ছিনিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তাঁরা।
জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় কতজন ছিলেন, সে প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি–প্রধান বলেন, জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়া ও পুলিশের ওপর হামলায় ১০ থেকে ১২ জন ছিলেন।
ব্রিফিংয়ের একপর্যায়ে সাংবাদিকেরা জানতে চান, পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিরা দেশে আছেন, নাকি সীমান্ত পার হয়েছেন। জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সীমান্তে সতর্ক আছি, যাতে জঙ্গিরা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশ ছাড়তে না পারে।’
গতকাল রোববার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। তাঁরা যখন সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি তাঁদের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশের এক সদস্যকে মারধর শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও পুলিশের ওপর হামলায় যোগ দেন। পুলিশের ওই সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন পুলিশের কয়েক সদস্য। তখন তাঁদের ওপর হামলা ও স্প্রে ছিটিয়ে সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের উল্টো দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে নিয়ে চলে যান জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যরা।
ছিনিয়ে নেওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টকে হত্যা করা হয়েছিল।
এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ সদর দপ্তর ও ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরিয়ে দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। সারা দেশে রেড অ্যালার্ট জারিও করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন।