ফেসবুকে ‘ক্যাসিনো সাঈদের’ সংবাদ দেওয়ায় হামলা
‘ক্যাসিনো সাঈদ’ ফিরেছেন শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন আহম্মেদ ইসলাম (পুতুল) নামের এক ব্যক্তি।
আহম্মেদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদের অনুসারীরাই এ হামলা করেছেন। গত রোববার রাজধানীর মতিঝিল এলাকার দিলকুশা ভবনের সামনে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। হামলাকারী নয়জনের নাম উল্লেখ করে পরদিন মতিঝিল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী আহম্মেদ।
মামলার এজাহারে আহম্মেদ ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রথম আলোর একটি সংবাদ ফেসবুকে দেওয়া কারণে আসামিরা তাঁর ওপর হামলা চালান। এতে তিনিসহ তিনজন আহত হন। এ সময় হামলাকারী ব্যক্তিরা তিনজনের সঙ্গে থাকা ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। চলে যাওয়ার সময় হত্যার হুমকি দেন হামলাকারী ব্যক্তিরা।
মামলায় মো. বশির (৪০), মোস্তফা মিয়া (৩৭), শফিকুল ইসলাম ইকবাল (৪৫), মো. মনজু (৩৮), মহসিন মির্জা (৩৫), মো. আলম (৩২), মো. জয় (৩৫), হানিফ ভূঁইয়া (৪৮) ও মো. মনিরের (৪৮) নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী আহম্মেদ ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্যাসিনো সাঈদকে নিয়ে একটি সংবাদ ফেসবুকে দেওয়ায় তার অনুসারীরা আমার ওপর হামলা করেছিল। পরে আমি থানায় মামলা করলে বশির ও মোস্তফা মিয়া নামের দুই হামলাকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারা জামিনে বেরিয়ে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রাসেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হামলার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁরা জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
২০১৫ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা চালু করেছিলেন মমিনুল হক।
এ ছাড়া মতিঝিল এলাকার আরও চারটি ক্লাবের ক্যাসিনোর ব্যবসাও তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এটি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছে ‘শুদ্ধি অভিযান’ নামে পরিচিতি পায়।
ওই অভিযানে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট ও তাঁর সহযোগী এনামুল হক ওরফে আরমান, বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমসহ মোট ১৩ জন গ্রেপ্তার হন। তবে দেশে ছেড়ে পালিয়ে যান মমিনুল হক। গত তিন বছর তিনি দুবাই, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন।
যুবলীগের একটি সূত্র বলছে, ক্যাসিনো-কাণ্ডে গ্রেপ্তারের আড়াই বছর পর গত বছরের আগস্ট মাসে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন সম্রাট। এরপর জামিনে মুক্ত হন তাঁর সহযোগী খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।
তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মমিনুল হক দেশে ফিরেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। ওই সব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। দেশে ফেরার পর গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদে ফেরেন তিনি।