পুরান ঢাকার ভাড়া বাসায় ব্যবসায়ীর হাত-পা-মুখ বাঁধা লাশ
রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজার থানার পোস্তা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নজরুল ইসলাম (৫২) নামের এক ব্যবসায়ীর হাত-পা–মুখ বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। চকবাজার থানা-পুলিশ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নজরুল পোস্তা এলাকার একটি ভবনের পঞ্চম তলায় স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন। পুরান ঢাকার লালবাগের আলী নগর এলাকায় তাঁর ‘নজরুল ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ’ নামের একটি কারখানা আছে। তাঁর বাড়ি নরসিংদীর বেলাব উপজেলায়, বাবার নাম শামছুল হক।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক জিল্লুর রহমান আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা বাসাটিতে যান। বাসার একটি কক্ষ থেকে হাত-পা–মুখ বাঁধা অবস্থায় তাঁর লাশটি উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত নজরুল ইসলামের ছোট ভাই তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার নজরুলের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নরসিংদীতে বেড়াতে যান। পোস্তার বাসায় নজরুল একাই ছিলেন। গত সোমবার রাত থেকে তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁকে না পেয়ে গতকাল রাতে তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলে সুমিত ঢাকায় চলে আসে। সুমিত তাড়াহুড়া করে বাসায় গিয়ে বাহির থেকে তালা খুলে তাঁর (নজরুলের) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়ে আসে। পরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে তারা লালবাগ ও চকবাজার থানায় যায়। কিন্তু কোনো থানা জিডি নেয়নি। দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পোস্তার বাসায় যায় সুমিত। সুমিতের সঙ্গে তার এক বন্ধুও ছিল। সুমিত বাসার ভেতরে ঢুকে দেখতে পায়, তার বাবার লাশ একটি কক্ষে পড়ে আছে, হাত-পা লুঙ্গি দিয়ে বাঁধা। তাঁর মুখও বাঁধা ছিল। কক্ষগুলোর মালামাল লন্ডভন্ড। পরে আশপাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সুমিত চকবাজার থানায় ফোন করে। পুলিশ এসে নজরুলের লাশ উদ্ধার করে।
তৌহিদুল বলেন, বাড়ির দারোয়ান তাঁর ভাইয়ের সম্পর্কে ঠিকমতো কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিনি তাঁদের বলেছেন, নজরুলের ব্যবসায়িক মালামাল সন্ত্রাসীরা গাজীপুরে আটকে রেখেছে বলে তাঁর (নজরুল) কাছ থেকে শুনেছেন। তাই নজরুল সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু এমনটা হলে নজরুলের ওয়ার্কশপের ব্যবস্থাপক অবশ্যই জানতেন। কিন্তু ব্যবস্থাপক বলেছেন, নজরুল সোমবার রাতে ওয়ার্কশপ থেকে বের হন। তারপর তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি। তাই আসলে কী ঘটেছে, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
তৌহিদুল আরও বলেন, বাসায় একটি স্যুটকেসে তাঁর ভাবির ৪০ হাজার টাকা ছিল। সেটি কেটে টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাসায় থাকা দুটি মুঠোফোন পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা।