চট্টগ্রামে ফ্রিল্যান্সারের টাকা সরানোর ঘটনায় ডিবির ৭ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত
চট্টগ্রামে হেফাজতে থাকাকালে এক ফ্রিল্যান্সারের কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগে নগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাত সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপরজনকে তলব করে কারণ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) স্পিনা রানী প্রামানিক আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ সদস্য হলেন নগর ডিবির পরিদর্শক রুহুল আমিন, উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বাবুল মিয়া, শাহপরান, মইনুল হোসেন, কনস্টেবল জাহিদুর রহমান ও আবদুর রহমান।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) স্পিনা রানী প্রামানিক প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আসার পর পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়ের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি হয়। গত বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটি পুলিশ কমিশনারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার। সাত পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর পরিদর্শক রুহুল আমিনকে তলব করে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন পুলিশ কমিশনার।
অভিযোগকারী ফ্রিল্যান্সারের নাম আবু বকর সিদ্দিক। নগরের অক্সিজেন এলাকায় তাঁর বাসা। তাঁর ভাষ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি ও ফয়জুলকে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার গুলবাগ আবাসিক এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় ডিবির দক্ষিণ বিভাগের একটি দল। সেদিন রাতে নগরের মনসুরাবাদে ডিবি হেফাজতে ছিলেন তাঁরা।
পরদিন বিকেলে অনলাইনে জুয়া খেলার অভিযোগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) অধ্যাদেশে একটি নন-এফআইআর মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় ডিবি। আদালত তাঁদের জরিমানা করে মুক্তি দেন।
মুক্তির পর আবু বকর অভিযোগ করেন, হেফাজতে থাকাকালে তাঁর মুঠোফোন ব্যবহার করে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লাখ করে ১০ লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করে ডিবির দলটি। এ ছাড়া তাঁর বাইন্যান্স অ্যাকাউন্ট (ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়) থেকে ২ লাখ ৭৭ হাজার ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা) স্থানান্তর করা হয়েছে।
আবু বকরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে ৫ মার্চ ডিবির পরিদর্শক রুহুল আমিনসহ আট পুলিশ সদস্য ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী হুসনুম লুবাবা। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।