চাকরি স্থায়ী হয়নি, পদোন্নতি পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী

মো. মশিউর রহমান দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভায় উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। চাকরি স্থায়ী হয়নি, অথচ পদোন্নতি পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হয়ে গেছেন। বর্তমানে ঢাকা জেলার দোহার পৌরসভায় কর্মরত তিনি।
পরে স্থানীয় সরকার বিভাগ জানতে পারে, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে মশিউর রহমান পদোন্নতি পেয়েছেন। এখন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কারণ দর্শানোর নোটিশও দেওয়া হয়েছে।
অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি করে দেশের কিছু পৌরসভায় কিছুসংখ্যক ব্যক্তি পদোন্নতি পেয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ তাঁরা চাকরি শুরু করেছিলেন কার্যসহকারী (ওভারসিয়ার), নকশাকারক কিংবা সার্ভেয়ার হিসেবে। যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি, এইচএসসি কিংবা ডিপ্লোমাধারী।
পৌরসভাগুলোতে কর্মরত একাধিক বিএসসি প্রকৌশলী বলেন, এভাবে অনিয়ম করে পদোন্নতি পাওয়ায় একদিকে পৌরসভাগুলো যেমন কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না, তেমনি বিএসসি প্রকৌশলীরাও চাকরির প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অতীতে পৌরসভাগুলোর চেয়ারম্যানরা (বর্তমানে মেয়র) এসব পদে নিয়োগ দিতেন। ফলে নিয়োগ ও পদোন্নতিতে নানা ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তার পরও পদোন্নতির বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে বিএসসি প্রকৌশলীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। পদোন্নতিও আর ঢালাও হচ্ছে না।
মশিউর রহমানের অনিয়মের ঘটনাটি উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার বিভাগের কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী (দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ) বর্তমানে ঢাকার দোহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ শাহজাদপুর পৌরসভা থেকে স্থায়ীকরণের জন্য ১৯৯১ সালের ২৮ মে স্থানীয় সরকার বিভাগে পত্র পাঠানো হলে তা অনুমোদন হয়নি। তার পরও তিনি পদোন্নতি ‘হাসিল’ করেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। তাঁর চাকরি নিয়োগ করা বা স্থায়ী করা হয়নি। তাঁর চাকরির নিয়োগ ও পদোন্নতি অবৈধ এবং বিধিসম্মত হয়নি বলে তদন্তেও প্রমাণিত হয়।
মশিউর রহমান বলেন, তিনি বিদেশে থাকার সময় একটি বেনামি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এ রকম করা হয়েছে। তাঁর দাবি, পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম হয়নি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও পৌরসভার কয়েকজন প্রকৌশলী অভিযোগ করেন বরগুনা, রাজশাহী, পাবনা, ঢাকা, কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি জেলার কিছু পৌরসভার কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যসহকারী কিংবা উপসহকারী প্রকৌশলী (চুক্তিভিত্তিক) অনিয়ম করে নির্বাহী প্রকৌশলী হয়েছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক মাধব বলেন, ফাইল না দেখে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেন না।