আনসার আল ইসলামের আইটি বিভাগের প্রধানসহ দুজন গ্রেপ্তার
নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আইটি বিভাগের প্রধানসহ দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)। রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আরিফুল ইসলাম জাহেদ ওরফে আইমান ওরফে আরাহান ওরফে রেহান (৩০) ও বাকী বিল্লাহ ওরফে আবু সামির ওরফে জাফর ওরফে ফয়সাল (৩৪)।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, আজ মঙ্গলবার দুজনকেই আদালতে পাঠানো হয়। আরিফুল নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। তিনি ঢাকা উত্তরের দায়ী বিভাগের প্রধান মাসুল (দায়িত্বশীল)। আর বাকী বিল্লাহ আনসার আল ইসলামের তথ্যপ্রযুক্তি ও নজরদারি প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান।
পুলিশ বলছে, আরিফুল চট্টগ্রামে লেখাপড়ার সময় ২০০৮ সালে জামায়াতুল মুসলিমিন নামের একটি সংগঠনে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে ব্যবসায় প্রশাসনে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময়ই সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। ধানমন্ডি, বনানী ও গুলশান এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের তিনি আনসার আল ইসলামে ভিড়িয়েছেন।
সম্প্রতি আরিফুল আল-নসীহা নামের একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের সদস্য নিয়োগ করছিলেন। ‘সাদকাহ’র জন্য টাকা তুলে জঙ্গি কার্যক্রমেও অর্থায়ন করেছেন।
বাকী বিল্লাহ সম্পর্কে পুলিশের ভাষ্য, বাকী বিল্লাহ মেজর জিয়ার মাধ্যমে ২০১৪ সালে এই সংগঠনে যোগদান করেন। তিনি প্রথমে মিডিয়া বিভাগে কাজ শুরু করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে কাজের দক্ষতা ও বহিষ্কৃত মেজর জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাঁকে আনসার আল ইসলামের আইটি ও নজরদারি প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান করা হয়। তিনি আনসার আল ইসলামের প্রধান মিডিয়া ফোরাম দাওয়ালিল্লাহ তৈরি করাসহ সংগঠনের সদস্যদের যোগাযোগের নিরাপত্তার জন্য একটি এনক্রিপটেড যোগাযোগমাধ্যম তৈরি করেন। অধিকতর নিরাপত্তার জন্য টেইলস নামে একটি অপারেটিং সিস্টেমও নিজেদের ব্যবহারোপযোগী করে দেন।
বাকী বিল্লাহ নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণে দ্বিতীয় বর্ষের পর আর এগোতে পারেননি।
গত বছরের নভেম্বর থেকে বাকী বিল্লাহর কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। সাদাপোশাকে একদল লোক গত ১২ নভেম্বর বাকীকে তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছিল পরিবার। এ নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে বাকী বিল্লাহর অপেক্ষায় স্বজনেরা শিরোনামে একটি খবর ছাপা হয়েছিল।