১০ আগস্টের পর যেভাবে থাকবে ‘বিধিনিষেধ’
চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও পাঁচ দিন বাড়িয়েছে সরকার। অর্থাৎ, ১০ আগস্ট পর্যন্ত চলমান বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। তবে ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে।
সরকার বলছে, ১১ আগস্ট থেকে সবকিছুই খোলা থাকবে। তবে তা সীমিত পরিসরে।
আজ মঙ্গলবার করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা শেষে এসব তথ্য জানান বৈঠকের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, ১১ আগস্ট থেকে অন্যান্য কলকারখানা, দোকানপাট, যানবাহন ও অফিসও চলবে। তবে একসঙ্গে নয়। স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হবে যেন পর্যায়ক্রমে এসব চলাচলের ব্যবস্থা করে। যেমন, গাজীপুর থেকে প্রতিদিন ১০০ গাড়ি চলে। সেখানে হয়তো ৩০টি বা ৫০টি চলবে। আজকে এগুলো যাবে তো পরদিন অন্যগুলো যাবে। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে পালা করে দেওয়া হবে। রেল, লঞ্চও চলবে। আর সীমিত আকারে চলার বিষয়টি নির্ধারণ করে জনগণকে অবহিত করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ। অর্থাৎ শর্তসাপেক্ষে খোলা হবে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে দুই-চার দিন দেখা হবে। বাস্তবতার নিরিখে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধই থাকছে। সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
অর্থাৎ, ১০ আগস্টের পর বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হয়ে যাবে।
৭ আগস্ট থেকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মোট ১৪ হাজার কেন্দ্রে এক যোগে গণটিকাদান শুরু হবে। সাত দিনে প্রায় এক কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। এই টিকায় বয়স্ক মানুষ অগ্রাধিকার পাবেন। একই সঙ্গে শ্রমজীবী মানুষ, দোকানদার ও গণপরিবহনের কর্মীদের নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকে টিকা নিতে হবে। টিকা না নিয়ে কেউ কোনো কর্মস্থলে আসতে পারবেন না।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, টিকা না নিয়ে কেউ দোকান খুলতে পারবেন না বা বাইরে বেরোতে পারবেন না। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁরা বাইরে চলাফেরা করবেন, তাঁরা টিকা না নিয়ে চললে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সরকারের হাতে এখন প্রায় সোয়া কোটি টিকা আছে। এ ছাড়া এই মাসে আরও প্রায় এক কোটি টিকা আসবে। আর চীনের সঙ্গে মিলে স্থানীয়ভাবেও টিকা উৎপাদনের কাজ এগিয়ে চলছে।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে বিধিনিষেধ চলছে, যা ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এবার সরকার থেকে ‘কঠোরতম’ বিধিনিষেধের কথা বলা হলেও শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সেটা আর রাখতে পারেনি। গত শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে জানানো হয়, ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা চলমান বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের পর শ্রমিকেরা গ্রামের বাড়ি থেকে দুর্ভোগ নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন কলকারখানার অভিমুখে রওনা হন। একপর্যায়ে গত রোববার দুপুর পর্যন্ত গণপরিবহন চালুর অনুমোদন দেয় সরকার। লঞ্চের সময় অবশ্য গতকাল সোমবার ভোর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।