স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, বেশি বয়স্কদের জন্য করোনার টিকার স্পট নিবন্ধনের সুযোগের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যসচিব।
দেশে করোনার টিকা গণহারে দেওয়া শুরু হয় চলতি মাসের ৭ তারিখ থেকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭১ জনের নিবন্ধন হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম থেকে জানানো হয়েছে। ২৭ জানুয়ারি থেকে মানুষ সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন শুরু করেন। গত দুই দিনে দৈনিক দুই লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন।
আগে টিকা দেওয়ার স্থানেই নিবন্ধন করা যেত। কিন্তু বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক অনুষ্ঠানে বলেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অন দ্য স্পটে আর টিকা দেওয়া হবে না। আগে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে তারপর টিকা নিতে হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অন দ্য স্পটে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ আর থাকছে না। ভবিষ্যতে আবারও অন দ্য স্পটে টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া চালু হতে পারে। আপাতত আজ (বৃহস্পতিবার) তা থেকে বন্ধ থাকবে।
তবে টিকা দেওয়ার স্থানে গিয়ে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ থাকলে তা বেশি বয়স্কদের জন্য সুবিধা হতো। আজ স্বাস্থ্যসচিবকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, টিকার জন্য বেশি বয়স্কদের স্পটে নিবন্ধন করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।
প্রতিদিন করোনার টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। গণটিকাদান শুরু হওয়ার প্রথম পাঁচ দিনে (১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) এই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সরকারের হাতে ছিল ৭০ লাখ টিকা। এই টিকা দুই ডোজ করে ৩৫ লাখ মানুষকে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে সারা দেশে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শেষ হবে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকার দ্বিতীয় চালান এ মাসে আসার কথা। এই টিকা সরবরাহের দায়িত্বে আছে বেক্সিমকো ফার্মা। তিন কোটি টিকা কেনা নিয়ে সরকার, সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর মধ্যে চুক্তি আছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা আসার কথা। প্রথম চালানে ৫০ লাখ টিকা এসেছিলে ২৫ জানুয়ারি। সেই টিকা বেক্সিমকো দেশের সব জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে পৌঁছে দেয়।
তিন দিন আগে বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ২১ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যে দ্বিতীয় চালানের ৫০ লাখ টিকা আনার প্রস্তুতি আছে। এ সময়ের মধ্যে টিকা আনতে হলে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউটকে জানাতে হবে।
আজ স্বাস্থ্যসচিব আবদুল মান্নানকে টিকার দ্বিতীয় চালানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দ্বিতীয় চালান সময়মতো আসবে। এ নিয়ে দ্বিধার কোনো কারণ নেই।
গ্রামপর্যায়ে মানুষ টিকা ঠিকমতো পাচ্ছেন না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মান্নান বলেন, গ্রামের মানুষ ঠিকমতো টিকা পাচ্ছেন না—এমন কোনো তথ্য তাঁদের হাতে নেই। সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে এবং তা মূল্যায়ন করে ব্যবস্থা নেবে।
স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র থেকে গ্রামের মানুষ রেজিস্ট্রেশনের সহায়তা নিতে পারছেন।
আজ বিএসএমএমইউয়ে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।