দ্বিগুণ ভাড়া গুনে যেতে হচ্ছে গন্তব্যে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সাত দিনের বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরে কোনো গণপরিবহন চলাচল করেনি। সকাল থেকে রাস্তায় রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার) ছিল। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় চাকরিসহ নানা কাজে বের হওয়া মানুষকে দ্বিগুণ ভাড়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে।
বিধিনিষেধের মধ্যে কাঁচাবাজার, মুদির দোকানসহ ফুটপাতে মানুষের ভিড় রয়েছে। মাস্ক ছাড়া বেশির ভাগ মানুষকে চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আজ নগরে আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।
নগরের অক্সিজেন মোড়ে সকাল নয়টার দিকে প্রবাসী বেলাল হোসেন চোখের চিকিৎসার জন্য ফয়’স লেক চক্ষু হাসপাতাল যাওয়ার জন্য রাস্তায় দাঁড়ান। আগে অক্সিজেন থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ১২০ টাকা ভাড়ায় ফয়’স লেকে যেতেন। আজ তাঁর কাছে চালক ৩০০ টাকা ভাড়া দাবি করছেন। এভাবে প্রায় সাতটি অটোরিকশার সঙ্গে তিনি দর-কষাকষি করেন। শেষমেশ ২৫০ টাকায় হাসপাতালে এসে পৌঁছান।
বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ১৩০ টাকা বাড়তি ভাড়া দিতে হয়েছে। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরতেও বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে।
নগরের জিইসি মোড় এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন মঈনুল ইসলাম। তিনি বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। হাটহাজারীর মদুনাঘাট থেকে তিনি জিইসি মোড়ে আসেন। মদুনাঘাট থেকে রিকশায় করে কাপ্তাই রাস্তার মাথায় আসেন। রিকশাভাড়া গুনতে হয়েছে ১২০ টাকা। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে যান সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ৫০ টাকায়। সেখান থেকে জিইসি যান রাইড শেয়ারে ১০০ টাকায়। ২৭০ টাকা ভাড়া গুনতে হলেও অন্য দিন তিনি বাড়ি থেকে অফিসে আসেন ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
মঈনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেসরকারি চাকরি। না গিয়ে উপায় নেই। বাড়তি ভাড়া দিলেও বেতন তো বাড়বে না। বিধিনিষেধ দিলেও সব প্রতিষ্ঠানে তা কার্যকর করা উচিত।’
বাড়তি ভাড়া নেওয়ার কথা স্বীকার করে অটোরিকশাচালক সালাউদ্দিন বলেন, ‘পেটের দায়ে গাড়ি বের করা হয়েছে। পুলিশ দেখলে গাড়ি ধরছে। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি, তাই ভাড়াও বাড়তি নিচ্ছি।’
নগরের বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়ি, রেয়াজউদ্দিন বাজারে ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয় সকাল থেকে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের বেশির ভাগেরই সামাজিক দূরত্ব কিংবা মাস্ক নেই।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, নাগরিকেরা যাতে বিধিনিষেধ মেনে চলেন সে জন্য প্রথম দিন থেকে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। গতকাল মাস্ক না পরা, দোকান খোলা রাখাসহ বিধিনিষেধ না মানায় ৫৩টি মামলা করা হয়। জরিমানাও গুনতে হয় অনেককে। আজও আটজন ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে রয়েছেন। সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, সে জন্য সচেতন করা হচ্ছে।