রাশিয়ার টিকা ‘স্পুতনিক-ভি’ বাংলাদেশেই উৎপাদনের ক্ষেত্রে দুটি ওষুধ কোম্পানির সক্ষমতা রয়েছে বলে মনে করছে টিকা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত ‘কোর কমিটি’। তাদের মতে, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা সংগ্রহ ও বিতরণবিষয়ক আন্তমন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির কাছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত কোর কমিটি গত বৃহস্পতিবার ওই দুই ওষুধ কোম্পানির সক্ষমতার বিষয়ে মতামত পাঠিয়েছে। এটি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।
এর আগে গত বুধবার স্বাস্থ্যসেবাসচিবের নেতৃত্বে পরামর্শক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোট তিনটি কোম্পানির উৎপাদন সক্ষমতার ভিত্তিতে স্কোরিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও কোর কমিটিকে চূড়ান্ত সুপারিশ পাঠাতে বলা হয়। টিকা উৎপাদনের জন্য হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসকে তখন বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা নির্ধারণের জন্য মোট পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। কোম্পানির দক্ষতা, মান, জনবল ও সামর্থ্য, অভিজ্ঞতা এবং কত দ্রুত উৎপাদনে যেতে পারবে—এসব বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হয়। হেলথকেয়ারের বিষয়ে কোর কমিটি বলেছে, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা এই মুহূর্তে তাদের নেই।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, যদি রাশিয়া টেকনোলজি ট্রান্সফার (প্রযুক্তি হস্তান্তর) করে, তবে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই ওই দুই কোম্পানি উৎপাদনে যেতে পারবে।
গত ১৩ এপ্রিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে টিকা উৎপাদন করতে পারে, এমন তিন প্রতিষ্ঠানের নাম পাঠান। তখন তিনি বলেছিলেন, স্পুতনিক-ভি উৎপাদনের জন্য অবকাঠামো ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের।
এদিকে রাশিয়া থেকে স্পুতনিক-ভি টিকা কেনার জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে পাঠানো সরবরাহ চুক্তির খসড়ায় বেশ কিছু অস্পষ্টতা ও অসংগতি পেয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। চূড়ান্ত চুক্তি সই করার আগে এসব অস্পষ্টতা ও অসংগতি দূর করার পরামর্শ দিয়েছে তারা। এরপরই টিকা কেনার পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বলেছে আইন মন্ত্রণালয়। ৬ মে আইন মন্ত্রণালয় খসড়া চুক্তির বিষয়ে তাদের মতামত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে পাঠিয়েছে। এতে মোট ২৯টি বিষয় নিশ্চিত হতে বলা হয়েছে। সরবরাহ চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এমন মত দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।