চীন কী এমন করেছে, যা বিশ্ব পারছে না

উহানের রাস্তায় কাজ করছেন কর্মীরা। ছবি: রয়টার্স
উহানের রাস্তায় কাজ করছেন কর্মীরা। ছবি: রয়টার্স

গত কয়েক দিন উহানে নতুন কোনো কেস পাওয়া যায়নি। যেখানে সারা বিশ্বে আক্রান্ত এবং মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, সেখানে চীনে এখন অনেকটা স্বস্তির নিশ্বাস! সেদিন তো আতশবাজি ফাটিয়ে উদ্‌যাপনও করল চীন।

১.
রিসোর্স পুলিং: সহজ ভাষায় বলতে গেলে, ওরা সারা দেশ থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, চিকিৎসাসামগ্রী উহানে পাঠিয়েছে। যেহেতু উহানের বাইরে তেমন একটা ছড়ায়নি, তাই বাকি অংশে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ভেন্টিলেটরের এবং অন্যান্য সামগ্রী মজুত ছিল।

সারা দেশ থেকে প্রায় ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী উহানে পাঠানো হয়েছে। সারা দেশের প্রতিটি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে। প্রায় তিন হাজার স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হলেও সেখানে নতুন করে আরও অনেক স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হয়েছে।

সারা দেশ থেকে অনেক ভলান্টিয়ার এবং নিরাপত্তাকর্মী পাঠানো হয়েছে। যারা সরবরাহ এবং কঠোর লকডাউন মেনটেইন করেছেন।

চীনের উহানে চিড়িয়াখানায় কাজ করছেন এক কর্মী। ছবি: রয়টার্স
চীনের উহানে চিড়িয়াখানায় কাজ করছেন এক কর্মী। ছবি: রয়টার্স

২.
কঠোর লকডাউন: চীন সরকার যেদিন থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছে, সেদিন থেকে আক্ষরিক অর্থেই কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি। কিছু বিল্ডিং পুরো লকডাউন ছিল কিছু কমিউনিটি লকডাউন ছিল। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স এসে নিয়ে যেত। খাদ্য থেকে শুরু করে ওষুধ, সব দুয়ারে দুয়ারে পাঠানো হয়েছে। দেড় কোটি মানুষকে এভাবে সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।

চীনকে স্বৈরাচারী বলে গালি দিতে পারেন, তাদের মানবাধিকার হরণ নিয়ে ঘৃণা করতেই পারেন—কিন্তু চীন যেভাবে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তা আর কেউ পারবে না। কারণ, সবাই এখানে বিনা প্রশ্নে সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য। অমান্য করার সাহসও করে না কেউ। তাই তারা লকডাউন করে ভাইরাসের ট্রান্সমিশন থামিয়ে দিতে পেরেছে। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত ফান্ড এবং রিসোর্স থাকাতে লকডাউন করতে ভাবতেও হয়নি। চাকরিজীবী থেকে ব্যবসায়ী—সবাইকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

চীন সরকার শুরুতে একটু দেরি করলেও পরে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করে করোনারি প্রায় হারিয়ে দিয়েছে। আমরা কি খুব বেশি দেরি করে ফেলেছি। ইতালির মতো কি আমাদেরও মাশুল দিতে হবে? নাকি আরও অনেক বেশি? এসব ভাবতে গেলেই দুঃস্বপ্ন দেখি। আর দেশের অবস্থা দেখলে ভাবি আমরা কি ঘুমিয়ে পড়েছি।

*লেখক: এমডি নিউরোলজি (অধ্যয়নরত), ইয়াংজো ইউনিভার্সিটি, জিয়াংসু, চীন