চট্টগ্রামে ঢিলেঢালা লকডাউন, শ্রমিকদের দুর্ভোগ
চট্টগ্রামে ঢিলেঢালাভাবে শুরু হয়েছে আট দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। আজ বুধবার সকাল থেকে নগরের বিভিন্ন সড়কে প্রাইভেট কার, রিকশা ও কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেখা গেছে। শহরজুড়ে ছিল রিকশার রাজত্ব। তবে রোজা শুরুর প্রথম দিন ও পয়লা বৈশাখের সরকারি ছুটি থাকায় ঘর থেকে লোকজন বের হয়েছে কম। পোশাকশ্রমিকসহ বিভিন্ন কারখানার লোকজন সকাল থেকে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য রাস্তায় জড়ো হয়। পোশাকশ্রমিকেরা কারখানার গাড়িতে চড়ে কাজে গেলেও অন্য শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
নগরের কালুরঘাট এলাকায় একটি কারখানায় কাজ করেন নাসির উদ্দিন। কিন্তু যাতায়াতের জন্য কারখানা থেকে কোনো গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তার বাড়ি হাটহাজারী। আজ সকালে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে হাটহাজারী সদর থেকে নতুনপাড়া আসেন। সেখান থেকে রিকশায় করে অক্সিজেন মোড়ে যান। সেখানে কোনো গাড়ি না পাওয়ায় রিকশায় করে কালুরঘাট যান তিনি। স্বাভাবিক সময়ে ৫০ টাকায় কর্মস্থলে পৌঁছালেও আজ তাঁর ৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। কারখানা খোলা থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁকে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে।
নাসিরের মতো কারখানা খোলা থাকা শ্রমিকদের কাজে পৌঁছতে আজ দুর্ভোগের শেষ নেই। তবে রাইড শেয়ারে অনেকে কর্মস্থলে পৌঁছান। নগরের মুরাদপুর থেকে রাশেদ ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ইপিজেডে তাঁর কারখানায় যান। তিনি জানান, রিকশায় পৌঁছতে দেরি হবে। ভাড়াও বেশি। তাই রাইড শেয়ারে করে গেছেন। মোটরসাইকেলে দুজন আগে পিছে বসার কারণে সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছুই করার নেই। কাজ না থাকলে খাব কী।
নগরের জামালখানসহ বিভিন্ন স্থানে মিষ্টির দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় ছিল উপচেপড়া। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে মিষ্টি কিনতে বের হয় মানুষ।
নগরের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের ১২টি ভ্রাম্যমাণ তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে বলে জানান নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) শাহ মুহাম্মদ আবদুর রউফ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তায় বের হওয়া গাড়িগুলো পুলিশ তল্লাশি করছে। বিনা প্রয়োজনে কেউ বের হলে গাড়িগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ মাস্ক না পরলে পরার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে মুভমেন্ট পাস নেওয়ার সংখ্যা কত জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগাযোগের জন্য বলেন তিনি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন কার্যকরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।