পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা, ফেনী-পরশুরাম সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীতে অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেনী-পরশুরাম সড়কের কয়েকটি স্থান কোমরসমান পানিতে তলিয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ২ জুলাই থেকে এই অঞ্চলে তৃতীয়বারের মতো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসন, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বেড়িবাঁধের আগের ১২টি ভাঙা স্থান দিয়ে এবং বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে দুই উপজেলায় ৭০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সব গ্রামীণ সড়ক, পুকুর, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব জানান, পরশুরাম উপজেলায় বন্যায় আগেই বেড়িবাঁধের ১২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল। কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পরশুরাম উপজেলার পৌরসভা এবং তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। পরশুরাম পৌরসভার বাউরখুমা, বাউরপাথর, দুবলাচাদ, বিলোনিয়া, অনন্তপুর, বেড়াবাড়িয়া, কোলাপাড়া, মির্জানগর, কালী কৃষ্ণনগর, কাশিনগর, ছয়ঘরিয়া, দক্ষিণ কাউতলী, চম্পক নগর, পূর্ব সাহেব নগর, জঙ্গলঘোনা ও গদানগরসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৯ হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, ‘মুহুরী নদীতে পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে। আমাদের নিকট ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৫০ টন চাল রয়েছে।’
অপর দিকে ফুলগাজী উপজেলায় মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে নতুন করে কোনো ফাটল না দেখা দিলেও আগের ফাটল দিয়ে এবং বাঁধ উপচে বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজী এবং পরশুরাম অংশ প্লাবিত হওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে সড়কপথে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঁইয়া জানান, মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী, মুন্সিরহাট ও আমজাদহাট ইউনিয়নের মোট ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী পরিবারের সংখ্যা চার হাজার।
জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, বন্যা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছেন।