বৃষ্টির মধ্যেও শাহবাগ মোড় ছাড়েননি কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলন চলছে। বৃষ্টির মধ্যেও আন্দোলনকারীরা রাস্তা ছাড়েননি বরং কেউ বৃষ্টিতে ভিজে, কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আন্দোলনকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন' ব্যানারে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে টিএসসি এলাকার রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে শাহবাগ মোড়ের দিকে যায়। মিছিলে ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, 'মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা সুযোগের সমতা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘একাত্তরের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’, ‘এক দফা এক দাবি এক, কোটা নট কাম ব্যাক’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
মিছিলটি দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে শাহবাগ মোড়ে এসে থামে। শাহবাগ মোড়ে আগে থেকেই বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিলেন। তবে আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়নি পুলিশ।
শাহবাগ মোড় অবরোধ করার আধঘণ্টা পর ঝুমবৃষ্টি শুরু হয়। তবে বৃষ্টির মধ্যেও আন্দোলনকারীরা শাহবাগের রাস্তা ছাড়েননি। কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে, কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজেই শাহবাগে অবস্থান করেছেন। আন্দোলনকারীরা 'ঝড়বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি রাজপথে' বলে স্লোগান দিয়েছেন।
বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, বৃষ্টি আমাদের আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে৷
আন্দোলনের আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘দাবি আদায় ছাড়া আমরা শাহবাগ মোড় ছাড়ব না। আমরা এক ঘণ্টার জন্য আসিনি। দাবির ফয়সালা হলেই কেবল রাস্তা ছাড়ব৷
এই বৃষ্টি এসেছে আমাদের শীতল করার জন্য৷ ঝড়বৃষ্টি-অমানিশা কাটিয়ে আমরা আমাদের দাবি আদায় করেই ছাড়ব৷ আমাদের শক্তিকে আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই বৃষ্টি এসেছে।’
এর আগে নিজেদের দাবি আদায়ে গতকাল বুধবার বিক্ষোভ-মিছিল এবং প্রায় দেড় ঘণ্টা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছিলেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। আন্দোলনকারীরা ১ জুলাই থেকে টানা কর্মসূচি পালন করছেন।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে যাতে শিক্ষার্থীরা যুক্ত হতে না পারেন, সে জন্য আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্য সেন হলের ফটকে তালা দিয়েছিল ছাত্রলীগ। ফলে মিছিলে আসতে চাইলেও শিক্ষার্থীদের অনেকে আটকা পড়েন। সমালোচনার মুখে পরে ফটক খুলে দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে হল থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি।