৯ কোটি টাকার সাপের বিষ
প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের সাপের বিষ উদ্ধার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই বিষ বেচাকেনা ও পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার রাতে পাচারকারী চক্রের ‘মূল হোতা’ মামুন তালুকদার (৫১) ও তাঁর সহযোগী মামুনকে (৩৩) আটক করে সিআইডির একটি দল। এ সময় দুটি বড় লকার ও ছয়টি কাচের কৌটায় সংরক্ষিত সাপের বিষ উদ্ধার করা হয়।
সিআইডি বলেছে, বাংলাদেশে সাপের বিষ বেচাকেনার কোনো বৈধতা নেই। মূলত সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল পাচারকারীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) শেখ মো. রেজাউল হায়দার। তিনি বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর সিআইডি ঢাকা মেট্রোর একটি টিম গাজীপুরের বাসন থানা এলাকা থেকে সাপের বিষ বেচাকেনা ও পাচারকারী একটি চক্রের কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওই মামলার তদন্তকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিআইডি জানতে পারে, এ রকম আরও কয়েকটি বড় ধরনের পাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে সাপের বিষ পাচারকারী চক্রের মূল হোতা মামুন তালুকদার ও তাঁর সহযোগী মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রেজাউল হায়দার বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সাপের বিষ পাচার হয়। এটার বৈশ্বিক মার্কেট রয়েছে, তবে বাংলাদেশে বিক্রির কোনো বৈধতা নেই। তিনি বলেন, দেশের বাইরে থেকে এ সাপের বিষ কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশে এসেছে। দু-তিন হাত ঘুরে হয়তো এই চক্রের মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার হতো। সাপের বিষ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।
তবে বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যালে এটি ব্যবহারের বৈধতা নেই। যে কারণে এটি বাংলাদেশে ব্যবহারের সুযোগও নেই। সিআইডি এখনো নিশ্চিত নয় যে এটা ঠিক কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশে আনা হয়েছে। এটা এলসির মাধ্যমে আনা হয়নি। জব্দ করা বিশ্বের কনটেইনারগুলোতে লেখা দেখা গেছে ‘মেড ইন ফ্রান্স’।
এক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল হায়দার বলেন, যথাসম্ভব এ অবৈধ সাপের বিষ পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পুরো তদন্ত শেষ হলে এটা স্পষ্ট হবে কে বা কারা কোন জায়গা থেকে আমদানির পর এটা পাচার করছিল। ইতিমধ্যে কয়েকটি চালান বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়ার তথ্য পেয়েছে সিআইডি।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর এই চক্রের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই চক্রের সঙ্গে আরও সাত-আটজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। যেহেতু সাপের বিষ লেনদেন, বেচাকেনা ও পাচার আইনত অপরাধ, তাই তাঁদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হবে বলে জানান তিনি।