২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

হাফ পাস: ‘ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা কি ধনী’

ছবি: সাজিদ হোসেন

রাজধানীর গণপরিবহনগুলোয় শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া কার্যকরের ঘোষণায় খুশি নন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাঁরা সারা দেশের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস চান।

আন্দোলনের মুখে রাজধানীর গণপরিবহনগুলোয় শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তবে নিরাপদ সড়কের জন্য আগে দেওয়া ৯ দফা দাবির বাকিগুলো মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ঘোষণা দেন, কাল বুধবার থেকে বেসরকারি মালিকানাধীন বাসে অর্ধেক ভাড়ায় চলতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এরপর ধানমন্ডিতে রাপা প্লাজার সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানায় পুলিশ।

এর জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, নিরাপদ সড়কের জন্য ৯ দফা দাবির একটি অর্ধেক ভাড়া কার্যকর করা। বাকি দাবিগুলোর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাকি দাবিগুলো মেনে প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এ সময় ‘আশ্বাস আর না, বাস্তবায়ন কর্ না’ বলে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, হাফ পাসের বিষয়টি সুরাহা হওয়ার কথা তাঁরা শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে অন্তত জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে সড়কের একটি লেন ছেড়ে দিতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রুবাইয়াত জামান আরও বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহনশীল ও মানবিক আচরণ করতে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আজ বেলা ১১টায় সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য দিন কাগজপত্র দেখে যান চলাচল করতে দিলেও আজ শিক্ষার্থীরা কোনো গাড়িই চলাচল করতে দিচ্ছিলেন না। এতে মিরপুর সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এরপর পুলিশ শিক্ষার্থীদের অন্তত একটি লেনে গাড়ি চলাচল করতে দেওয়ার অনুরোধ করে।

পুলিশের অনুরোধের পর শিক্ষার্থীরা কাগজপত্র যাচাই করে একটি লেনে গাড়ি চলতে দিচ্ছে। তবে সড়কে গাড়ি আটক করে কাগজপত্র যাচাই ও অল্পসংখ্যক গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে।

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আয়াত উল্লাহ হাসনাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে ঘোষণা এসেছে, তা দায়সারা গোছের। আমরা সারা দেশে হাফ পাস চাই এবং এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে, মুখের কথা বিশ্বাস করি না।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজকের ঘোষণায় অন্তত দুটি সীমাবদ্ধতা দেখছেন। প্রথমত, হাফ পাস শুধু ঢাকার ভেতরে কার্যকর করার ঘোষণা এবং দ্বিতীয়ত, ছুটিতে এ সুবিধা কার্যকর না থাকা।

ছবি: সাজিদ হোসেন

ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন, ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের কি ধনী ভাবা হচ্ছে? অপর যে প্রশ্ন তাঁরা তুলছেন, তা হলো ছুটিতে শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব চলে যায় কি না।

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী নাদিম খান বলেছেন, এ ঘোষণায় তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না। প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। আগামী ৭ ডিসেম্বর সংসদে তাঁদের স্মারকলিপি দেওয়ার কথা রয়েছে। সেই কর্মসূচি অপরিবর্তিত থাকবে।

আবুজর গিফারী কলেজের ছাত্র সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সারা দেশের সব ছাত্রছাত্রীকে এ সুবিধা দিতে হবে এবং অবশ্যই প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। নাহলে রাজপথে তাঁদের ওপর চালকদের যে নির্যাতন, তা বন্ধ হবে না।

এই ছাত্র আরও বলেন, কাল রাতেই আপনারা দেখেছেন, হাফ পাসের দাবি করায় কীভাবে একজন ছাত্রকে পিষে ফেলা হয়েছে।