হাজী সেলিমের ছেলে ও দেহরক্ষী র্যাব হেফাজতে
নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় সাংসদ হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদকে হেফাজতে নিয়েছে র্যাব। আজ সোমবার দুপুর থেকে রাজধানীর লালবাগে হাজী সেলিমের বাসায় র্যাব অভিযান চালায়। অভিযান চলাকালে বেলা সোয়া তিনটার দিকে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
আশিক বিল্লাহ বলেন, অভিযান এখনো চলছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযান শেষে জানানো হবে বাসা থেকে কী পাওয়া গেছে।
হেফাজতে নেওয়া দুজনের পরিচয় জানাতে গিয়ে আশিক বিল্লাহ বলেন, ইরফান সেলিম ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল এবং নোয়াখালীর একজন সাংসদের জামাতা। আর জাহিদ হলেন ইরফানের দেহরক্ষী। তিনি বলেন, গতকাল যে ঘটনায় এদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেই ঘটনাস্থলে দুজনই উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর রাজধানীর কলাবাগান ক্রসিংয়ের কাছে মারধরের শিকার হন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সাংসদের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। এরপর গাড়িটি থেকে কয়েকজন ব্যক্তি নেমে ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় আজ সকাল পৌনে আটটার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার একটি মামলা হয়। হাজী সেলিমের ছেলেসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন মারধরের শিকার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহম্মেদ খান।
ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে এ মামলার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন ইরফান সেলিম, এ বি সিদ্দিক দীপু, জাহিদ, মীজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা আরও দু-তিনজন ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে গাড়ি চালক মীজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের কথা সকালে জানায় পুলিশ।
গতকাল রাত সোয়া ১০টার দিকে ধানমন্ডি থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল্লাহ জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই গাড়ি সাংসদ হাজী সেলিমের। তিনি গাড়িতে ছিলেন না। তাঁর ছেলে ও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। পুলিশ সাংসদের গাড়ি ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল রাতেই ধানমন্ডি থানায় নিয়ে যায়।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তিনি রাস্তায় জটলা থেকে মুঠোফোনে ভিডিও করেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আহত এক ব্যক্তি নিজেকে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ বলে পরিচয় দেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, তিনি স্ত্রীসহ মোটরবাইকে ফিরছিলেন। ওই গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। তিনি তখনই মোটরসাইকেল থামান এবং নিজের পরিচয় দেন। গাড়ি থেকে নেমে দুই ব্যক্তি তাঁকে মারধর করেন।