সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান গণসংগীতশিল্পীদের
সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন দেশের সাংস্কৃতিক নেতারা। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে গণসংগীত’ শিরোনামে কর্মসূচি থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় ভার্চ্যুয়ালি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, ‘একটা ভয়ানক সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। মিথ্যাচারের ওপর ভিত্তি করে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে, যা এখন প্রমাণিত। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে ফাটল ধরানো হয়েছে।’
মফিদুল হক বলেন, ‘আমরা এসব ঘটনায় সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়বদ্ধ করব। পাশাপাশি ভাবতে কবে, কীভাবে আমরা এ থেকে বের হব। আমাদের সাংস্কৃতিক বিপ্লব জাগিয়ে তুলতে হবে। সংস্কৃতির বাণীমন্ত্রে সবাইকে নিয়ে আসতে হবে। বহু মতের বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে নিয়েই যেতে হবে।’
অনুষ্ঠানে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন, ‘আমরা এই ভূমিপুত্রের সন্তান। এটাই আমার পরিচয়। আমাদের পরিচয় আমরা বাঙালি। আসল সংখ্যালঘু হচ্ছে সেই কুচক্রী মহল। কথা হচ্ছে, আমরা কি তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করব? আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। সাংস্কৃতিকভাবে, গণসংগীতের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধরে রাখতে হবে।’
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতি একেবারে ভিন্ন। আমরা বলি দীর্ঘ ২১ বছর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকেরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে এই রাষ্ট্রের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রটাকে বিনষ্ট করেছে। গত ১২ বছর সরকার কেন পারল না সম্প্রতি ফেরাতে? এটা ব্যর্থতা, সে প্রশ্ন আমাদের করতে হবে। নিজেদেরও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় নিজেকে গড়ে তোলার সুযোগ কেন পেল না, তা নিয়ে ভাবতে হবে।’
সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা কেন দাঁড়িয়ে কথা বলি, সাংস্কৃতিক আন্দোলন করি। বঙ্গবন্ধু কী কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন? আমাদের সেই শক্তির বিরুদ্ধে আবার উঠে দাঁড়াতে হবে।’
পরে গণসংগীত সমন্বয় পরিষদভুক্ত প্রায় ১৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠন গণসংগীত পরিবেশন করে।