২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

লঞ্চ-ট্রেনেও অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

সোমবার সন্ধ্যায় ৯ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মোমবাতি প্রজ্বালন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা, ৬ ডিসেম্বর
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও সারা দেশে বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ সব গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়ার (হাফ পাস) শর্তহীন প্রজ্ঞাপন জারি করাসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। চলমান আন্দোলন নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-আমলা এবং পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকপক্ষের অনেক নেতা ‘তামাশাপূর্ণ মন্তব্য’ করছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

সোমবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সড়কে অসংগতির অন্ধকার দূরীকরণের লক্ষ্যে মোমবাতি প্রজ্বালন ও সারা দেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে প্রতিবাদী গানের আসর’ শীর্ষক এক কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।

নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী, ঢাকাসহ সারা দেশে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া আগামীকাল বিকেল চারটায় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ঢাকায় একটি সমাবেশ হবে।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন। সেখানে মোমবাতি প্রজ্বালনের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সমাবেশে আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ইনজামুল হক নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে চলমান মানববন্ধন মঙ্গলবারও অব্যাহত থাকবে৷ আগামী শুক্রবারের কর্মসূচির জন্য হলরুম নেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ হলরুম না পাওয়া গেলে কর্মসূচিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে।

লঞ্চ ও গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত করার দাবিতে গত রোববার ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন বরিশালে আন্দোলনরত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক কোনো বক্তব্য না এলে বরিশাল শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন তাঁরা।

সোমবারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বরিশালের সেই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে ইনজামুল হক বলেন, ‘বরিশাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার যে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে, সেই সময়সীমা আগামীকাল মঙ্গলবার শেষ হবে৷ এর পর থেকেই বরিশালে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে৷ আমরাও ঢাকার সদরঘাটে সেই কর্মসূচি পালন ও সফল করব।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, সারা দেশে চলমান আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রী, আমলা এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিকপক্ষের অনেক নেতার কাছ থেকে আমরা নেতিবাচক মন্তব্য পাচ্ছি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরা তামাশাপূর্ণ বক্তব্য আশা করিনি। সরকারের কোনো প্রতিনিধি আমাদের এখন পর্যন্ত কোনো আশ্বাসও দিতে পারেননি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ট্রেন ও নৌপথে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে গত রোববার রেল মন্ত্রণালয় ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত না জানালে রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি দেওয়া হবে।

আন্দোলনের আরেক সংগঠক মোহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কপথের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিকে আলোর দিশা দিতে’ তাঁরা মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি করছেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেও সোমবার চট্টগ্রাম ও লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। ঢাকার রামপুরায়ও তাঁদের সহপাঠীরা কর্মসূচি পালন করেন। হাফ পাসের শর্তহীন প্রজ্ঞাপন জারি না করা হলে প্রয়োজনে তাঁরা সচিবালয়ের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করবেন।

জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে দেশাত্মবোধক গান ‘মাগো ভাবনা কেন’র সঙ্গে কণ্ঠ মেলানোর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওই কর্মসূচি শেষ হয়।