রোদে পুড়ে তাঁরা টিসিবির লাইনে

টিসিবির পণ্য বিক্রির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের পেছনে দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন মুখ, যাঁরা সাধারণত বাজার থেকেই কেনাকাটা করেন।

বাজারের চেয়ে কিছুটা সাশ্রয়ী দামে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের পেছনে ক্রেতারা। গতকাল দুপুরে মহাখালী সাততলা বস্তি এলাকায়।
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

তপ্ত দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি মোড়ে একটি ট্রাকের পেছনে মোটামুটি ৭০ জন মানুষের লাইন। ট্রাকটিতে বাজারের চেয়ে কম দামে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়। তা কিনতে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রবীণ এক দম্পতি।

এই দম্পতি তাঁদের ছেলের সঙ্গে থাকেন পশ্চিম রাজাবাজারে। তাঁরা জানান, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ব্যাপক চড়া। সংসারের ব্যয় মেটাতে চাকরিজীবী ছেলের কষ্ট হচ্ছে। তাই স্বামী–স্ত্রী দুজন মিলে টিসিবির ট্রাকের সামনে দাঁড়িয়েছেন কম দামে তেল-চিনি কিনতে। দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁরা তেল-চিনি কিনে বাসায় ফেরেন।

বাজারে এখন চাল, তেল, চিনি, মুরগিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম চড়া। এ পরিস্থিতিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকের সামনে মানুষের ভিড় বাড়ছে।

লাইনে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন মুখ, যাঁরা সাধারণত বাজার থেকেই কেনাকাটা করেন।

একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিরা আক্তার মহাখালীতে টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুই লিটার ভোজ্যতেল এবং দুই কেজি করে চিনি, ছোলা, ডাল ও পেঁয়াজ কেনার পর তিনি বলেন, বাজার থেকে কিনলে ১৯০ টাকা বেশি লাগত। তবে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হলো।

হিরা আক্তার আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেশি। তেল-মসলা কম ব্যবহার করেও খরচ পোষানো যাচ্ছে না।

বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের এক লিটারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এখন ১৩৯ টাকা, যা ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে টিসিবি প্রতি লিটার তেল বিক্রি করে ১০০ টাকায়। এ দর গতকাল থেকে ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে চিনির দামও। বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়।

টিসিবির পরিবেশকেরা বলছেন, দাম বাড়লেও মানুষের ভিড় কমেনি। পণ্য নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বড় লাইন তৈরি হচ্ছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি শেষ হয়ে যায়। মহাখালীতে টিসিবির পরিবেশক মেসার্স পিলপিল এন্টারপ্রাইজের মালিক ফোরকান হোসেন বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) গুদাম থেকে পণ্য নিয়ে আসতে কিছুটা দেরি হয়। এসে দেখি মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছে।’

এদিকে বাজারে চাল, ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। পবিত্র শবে বরাত শেষে চাহিদা কমে যাওয়ার পর কিছুটা কমেছে মুরগির দাম। গতকাল কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ টাকা, সোনালিকা (কক) মুরগি ৩১০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।