রাজারবাগ দরবার ও পীরের সম্পদ তদন্তের আদেশ বহাল
ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরিফ ও দরবারের পীর দিল্লুর রহমানের সম্পদ ও দায় বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তদন্ত করতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত হয়নি। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদন ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে রাজারবাগ দরবার শরিফ ও দরবারের পীর দিল্লুর রহমানের সম্পদ ও দায় বিষয়ে তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অভিমতের ভিত্তিতে পীর ও তাঁদের অনুসারীদের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, সে বিষয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে তদন্ত করতে নির্দেশসহ কয়েক দফা নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ছাড়া পৃথক মামলা দিয়ে রিট আবেদনকারীদের হয়রানির যে অভিযোগ, তা তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছিলেন। তদন্ত করে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদন বিবেচনায় তদন্তকাজে তিনটি সংস্থা পদক্ষেপ নেবে বলে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারীদের অযথা হয়রানি না করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর রুলে রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফৌজদারি মামলা দিয়ে হয়রানি করায় দিল্লুর রহমান ও তাঁর ১১ সহযোগীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রিট আবেদনকারীরা হলেন মো. আবদুল কাদের, মাহবুবুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মো. আলা উদ্দিন, জিন্নাত আলী, আইয়ুবুর হাসান সিয়াম, নাজমা আক্তার ও নার্গিস আক্তার।
দেশের ছয়টি জেলায় পৃথক ৩৪টি মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ এনে রাজারবাগের পীর ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে সাত বছর বয়সী শিশু, দুজন নারী, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদ্রাসার শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ আট ব্যক্তির করা রিটের শুনানি নিয়ে ওই আদেশ দেওয়া হয়। রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলার বাদী মফিজুল ইসলাম হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে মফিজুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
পরে মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের ১৯ সেপ্টেম্বর দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে মফিজুল ইসলাম আবেদনটি করেন। চেম্বার আদালত স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। ফলে তদন্তসহ হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বহাল থাকছে।
আরও পড়ুন