মেয়রকে বলেছি বিকল্প খোঁজার জন্য: তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঢাকার কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণে বিকল্প জায়গা খুঁজে বের করতে উদ্যোগী হওয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকের গলির মুখের খোলা জায়গাটি তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিতি। সেখানে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় গতকাল রোববার ওই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্না ও তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলেকে ধরে নিয়ে প্রায় ১৩ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে মধ্যরাতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি শিশুদের খেলার মাঠে থানা নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন মানবাধিকারকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। এ নিয়ে আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেলে ওই মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে যখন নানা দিকে প্রতিবাদ চলছে, তার মধ্যে আজ দুপুরে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে ঈদবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়র বলেছেন, এই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতে। আমরা মনে করি, খেলার মাঠে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে, এটাই স্বাভাবিক এবং খেলার মাঠ যাতে থাকে, সে জন্য আমরা মনে করি খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। মেয়রকে বলেছি, সবাইকে বলেছি বিকল্প একটা খোঁজার জন্য। যদি না হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও এটা অতীব জরুরি। এটা আমরা পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব, কী করা যায়।’
ঢাকায় শিশুদের খেলার মাঠ কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যে খেলাধুলা করেছি, সেই অবস্থাটা এখন আর নেই। আমরা সে জন্য কষ্ট বোধ করি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। এর মূল কারণ আমাদের নগরায়ণ, আমাদের জায়গা কম...’
তেঁতুলতলা মাঠ নিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, জেলা প্রশাসক জায়গাটি খাসজমি বলে চিহ্নিত করে বরাদ্দ দিয়েছিলেন কলাবাগান থানাকে। প্রক্রিয়া শেষে যখন ভবন নির্মাণ করতে যায়, তখন খেলার মাঠের দাবি ওঠে।
থানার জন্য স্থায়ী ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কলাবাগান থানা ভবন দীর্ঘদিনের একটি প্রচেষ্টা। ভাড়া ভবনে থানা পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হই, তাহলে সবকিছু মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।’
সৈয়দা রত্ন ও তাঁর ছেলেকে থানায় আটকে রেখে হয়রানির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে সন্ধ্যার পরে অনেকেই ফোন করেছিল। আমি ঘটনার যতটুকু জেনেছি এইটুকু হচ্ছে, তারা লাইভ ভিডিওতে এসে অনেক কিছু প্রচার করছিল। যেগুলো নাকি একটু অসংগতিপূর্ণ। সে জন্য বারবার নিবৃত্ত করার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন থামাতে পারেনি, তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
নিউমার্কেট এলাকার সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই ঘটনায় যাঁরা শনাক্ত হবেন, চিহ্নিত হবেন, ভিডিও ফুটেজে চিহ্নিত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।