মির্জা ফখরুলের কুশপুত্তলিকা দাহ করল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ
১৯৭১ সালের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। একই সঙ্গে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুরও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে সংগঠনটি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মির্জা ফখরুল ও মিজানুর রহমানের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছে তারা।
গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি মিলনায়তনে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একাত্তরের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ অবশ্যই ইতিহাস। আমরা শুধু ৭ মার্চ নয়, ২ মার্চ, ৩ মার্চ পালন করছি। ২ মার্চ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন আ স ম আবদুর রব। এটা স্বাধীনতার ইতিহাসের অংশ। ৩ তারিখ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেছেন শাজাহান সিরাজ। এটাকে অস্বীকার করব কী করে?’
আর গত মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যের একাংশে মিজানুর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে ‘অশোভন’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেদিন সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ রাজশাহী নগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। এ সময় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে মিজানুর রহমানকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার ঘোষণা দেন। গত শনিবার সন্ধ্যায় ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা পার হয়। রোববার বেলা ১টা ২৮ মিনিটে গণমাধ্যমে দুঃখ প্রকাশ করার ই-মেইল বার্তা পাওয়া যায়।
এসবের প্রতিবাদে আজ বিকেলে কুশপুত্তলিকা দাহ করার আগে মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সব সময় আপসহীন। অবিলম্বে মিজানুর রহমান মিনুর গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। তাঁরা বারবার অপরাধ করে বারবার ক্ষমা চাওয়া জাতির সঙ্গে তামাশা করা বলে আমরা মনে করি। পুরো বিএনপি দলটি এখন তামাশায় পরিণত হয়েছে।’
আল মামুন আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ঐতিহাসিক ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস বিকৃতি করে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। দেশের মানুষ অতীতেও বিএনপির এমন ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে, ভবিষ্যতেও দেবে।’
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।