মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরেকজনের মৃত্যু
রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত আরেক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ বুধবার সকাল পৌনে সাতটায় রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা যান। ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম ইমরান হোসেন (২৫)। বাবার নাম আবদুল হামিদ। বাড়ি টাঙ্গাইলের লাউকাঠি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে ইমরান সবার বড়। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল মিটে চাকরি করতেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানান, ইমরানের শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
গত রোববার সন্ধ্যার ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নয়জন মারা গেলেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত হন দুই শতাধিক মানুষ। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত তিনজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁরা হলেন কামিল, হৃদয় ও শামীম।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন চারজন চিকিৎসাধীন। তাঁরা হলেন মো. নুর নবী (৩০), মো. রাসেল (২১), আবু কালাম (৩৩) ও জাফর আহামেদ (৬১)। তাঁদের মধ্যে নুর নবী ও রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে মূল সড়কের পাশের তিনটি ভবন প্রায় বিধ্বস্ত হয়। আশপাশের অন্তত সাতটি ভবনের কাচ উড়ে যায়। দুমড়েমুচড়ে যায় রাস্তায় থাকা তিনটি বাস। বিস্ফোরণের কারণ ও সূত্রপাত কোথা থেকে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার জন্য মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রমনা থানায় মামলাটি হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভবনে অতি পুরোনো বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহার করা হচ্ছিল। ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস ব্যবস্থাপনা থাকায় ভবনের ভেতরে গ্যাস জমে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। নিচতলার শরমা হাউস, বেঙ্গল মিট, গ্র্যান্ড কনফেকশনারি এবং দ্বিতীয় তলায় থাকা সিঙ্গারের অবহেলাও থাকতে পারে। তারা অননুমোদিত গ্যাস ও বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার করছিল বলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত গ্যাস সরবরাহ, বিদ্যুৎ কোম্পানির ত্রুটিপূর্ণ সংযোগ এবং সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ও গাফিলতিপূর্ণ ড্রেন খননের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তদন্তযোগ্য। এজাহারে এসব সন্দেহের বিষয় উল্লেখ করে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে কাউকে আসামি করা হয়নি।
পুলিশের করা মামলাটি তদন্ত করে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।