পুলিশ যা করল, তা ‘লজ্জাজনক’

হাজেরা খাতুন

দিনদুপুরে বাসার দরজা ভেঙে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে পুলিশের মারমুখী আচরণে হতভম্ব নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল হকের পরিবার। তারা বলছে, কখনো কারও বাসায় এ রকম কিছু ঘটতে পারে, তা চিন্তারও বাইরে।

সাজেদুলের অসুস্থ মা হাজেরা খাতুন বললেন, গত ৫০ বছরে তাঁদের বাসায় ড. কামাল হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দেশের গণ্যমান্য অনেকেই এসেছেন। সাজেদুলের বাবাও রাজনীতি করতেন। তিনি এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার ছিলেন। কিন্তু গত রোববার বাসায় ঢুকে পুলিশ যা করল, তা লজ্জাজনক।

নিখোঁজ সাজেদুল ঢাকা উত্তর সিটির ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাসা রাজধানীর তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগে। ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন তিনি। তাঁর মা সত্তরোর্ধ্ব হাজেরা খাতুন গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করা সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর আহ্বায়ক। বিভিন্ন সময়ে গুমের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মিলে এই সংগঠন গড়ে তুলেছে।

হাজেরা খাতুনের সুস্থতা কামনা করে গত রোববার বাদ জোহর তাঁদের শাহীনবাগের বাসায় দোয়ার আয়োজন করা হয়। এতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যোগ দেন। সেখানে ‘গোপন বৈঠক’ হচ্ছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ নেতা-কর্মীকে ধরে নিয়ে যায়।

বাসায় প্রবেশের পর পুলিশ হুলুস্থুল কাণ্ড ঘটিয়েছে দাবি করে সাজেদুলের দুই বোন মারুফা ইসলাম ও আফরোজা ইসলাম বলেন, তাঁদের পরিবারের গাড়িচালক বিপ্লবকেও পুলিশ তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁরা বাধা দেওয়ায় বিপ্লবকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। পুলিশের অন্তত সাতটি গাড়ি এসেছিল। শতাধিক পুলিশ সদস্য এসেছিলেন জানিয়ে তাঁরা বললেন, বাসার প্রতিটি কক্ষে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। একটা ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল।

১১ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ, কারাগারে ১

দোয়ার অনুষ্ঠান থেকে আটক করা ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকেই ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে ঢাকা মহানগর বিএনপির (উত্তর) যুগ্ম আহ্বায়ক আক্তার হোসেনকে প্রায় আড়াই মাস আগের রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।