বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু পাঁচটি দাবি বাস্তবায়নের আগে এই পরীক্ষা না নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। নিজেদের ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার বিকেল থেকে বুয়েটের মিলনায়তনে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বৈঠক হয়। সেখানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করলেও ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নিয়ে দেখা দেয় দ্বিমত। বুয়েট প্রশাসন নির্ধারিত দিনেই পরীক্ষা নিতে চায়, আর শিক্ষার্থীরা চান তারিখটি পেছানো হোক। বৈঠক শেষে রাত পৌনে ১১টার দিকে বুয়েট শহীদ মিনারের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীরা নিজেদের অবস্থান জানান।
আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে বুয়েটের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ দফা দাবি আদায়ে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তবে উপাচার্যের শেষ মুহূর্তের অনুরোধ ও সারা দেশ থেকে যেসব ছোট ভাই-বোনেরা বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের কথা বিবেচনা করে আমরা স্বল্প সময়ে বাস্তবায়নযোগ্য পাঁচটি দাবি বাস্তবায়িত হলে ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে বুয়েট প্রশাসনের সঙ্গে আমরা একমত হব।’
যে পাঁচটি দাবি বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে একমত হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন, সেগুলো হলো:
১. হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে সাময়িক বহিষ্কার করতে হবে এবং পরে অভিযোগপত্রে যাঁদের নাম আসবে, তাঁদের স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে—এই মর্মে বুয়েট প্রশাসনকে একটি নোটিশ জারি করতে হবে।
২. আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করবে ও তাঁর পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বুয়েট প্রশাসন বাধ্য থাকবে-এটি নোটিশে লেখা থাকতে হবে।
৩. বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে হলগুলো থেকে অছাত্র ও অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত করতে হবে। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর কার্যালয় সিলগালা করতে হবে।
৪. বুয়েটে আগে ঘটে যাওয়া সব শিক্ষার্থী নির্যাতন, হয়রানি ও ভবিষ্যতে এ ধরনের যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম যুক্ত করতে হবে এবং এর পূর্ণ মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করে শাস্তি দিতে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। বিষয়টি একটি নোটিশের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
৫. প্রত্যেক হলের সব তলায় সব উইংয়ের দুইপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা যুক্ত করতে হবে এবং এই সিসিটিভি ফুটেজ সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে—এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করতে হবে।