নুরুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
ফেসবুক লাইভে ধর্ষণ মামলার বাদী সম্পর্কে ‘মানহানিকর’ মন্তব্যের অভিযোগে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
আজ বুধবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি হয়। প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন।
আগে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে মামলা করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এ মামলা করেছেন।
নুরুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে আগে রাজধানীর দুটি থানায় দুটি মামলা করেন এই ছাত্রী। এবার তিনি শুধু নুরুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেন।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ (১)/ক, ২৯ (১) ও ৩১ (২) ধারায় মামলাটি করেছেন ওই ছাত্রী।
মামলার এজাহারে নুরুলকে ‘আইন অমান্যকারী, বাকপটু ও ধূর্ত ব্যক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ওই ছাত্রী।
সম্প্রতি ফেসবুকে লাইভে আসেন নুরুল। ধর্ষণের মামলা করা ওই ছাত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে লাইভে বিভিন্ন কথা বলেন নুরুল। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল নুরুলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেন সেই ছাত্রী।
মামলায় ওই ছাত্রী অভিযোগ করেছেন, আসামি নুরুল একজন আইন অমান্যকারী, বাকপটু ও ধূর্ত ব্যক্তি। তিনি প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের মনগড়া, আইনবহির্ভূত, সরকার-রাষ্ট্রবিরোধী অসত্য, অর্থহীন ও উসকানিমূলক বক্তব্য কোনো কারণ ছাড়াই নিজেকে ভাইরাল করার জন্য প্রকাশ করে থাকেন। ১২ অক্টোবর বেলা আড়াইটায় তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি তাঁকে (ছাত্রী) দুশ্চরিত্রা বলেন, যা একটি মেয়ের জন্য অপমানজনক শব্দ। এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য সমাজে ঘৃণা-শত্রুতা-অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। তাঁর (ছাত্রী) সুনাম ক্ষুণ্ন ও মানহানি করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এগুলো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এই মামলায় পরোয়ানা জারি করে নুরুলকে গ্রেপ্তার করে ন্যায়বিচার করতে ওই ছাত্রী আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
ধর্ষণ মামলায় নিজের সংগঠনের দুই নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় গত সোমবার ফেসবুকে নিজের পেজ থেকে লাইভে এসেছিলেন নুরুল।
ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে গত ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন ওই ছাত্রী।
মামলায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া আহ্বায়ক হাসান আল মামুনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে নুরুলও আছেন। পরে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগে আরও একটি মামলা করেন ছাত্রী।
ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় পরিষদের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তাঁরা হলেন মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. নাজমুল হুদা। সাইফুল সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। আর নাজমুল সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি।
আগের দুই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশন করছেন ওই ছাত্রী। তিনি বলছেন, সব আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তাঁর অনশন চলবে।