ঢাবি ছাত্রকে ‘নির্যাতন’, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বললেন, ‘সে স্নেহের ছোট ভাই’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তানভীর সিকদারের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ নাকচ করে এই নেতা বলেছেন, ওই ছাত্র তাঁর ‘স্নেহের ছোট ভাই’।

শুক্রবার দিবাগত রাতে সলিমুল্লাহ হলে ওই ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রের নাম রাজিমুল হক ওরফে রাকিব। তিনি ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।

রাজিমুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সলিমুল্লাহ হলে আমার কক্ষে ঘুমাচ্ছিলাম। তখন চারজন সহপাঠী এসে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে। তারা জানায়, হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর সিকদার আমাকে তাঁর কক্ষে ডেকেছেন। হঠাৎ ঘুম থেকে ওঠায় আমার মাথাব্যথা শুরু হয়। এতে আমি সেখানে যেতে অনীহা জানাই।’

বিষয়টি তানভীরকে জানালে তিনি রাজিমুল হককে ডাকতে তাঁর সহপাঠীদের আবার পাঠান। রাজিমুল হক বলেন, ‘সহপাঠীরা আমাকে জোর করে তানভীরের কক্ষে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে যাওয়ার পর পরই তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি কেন ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অনিয়মিত, তা জানতে চান।’

তানভীরের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে রাজিমুল হক বলেন, ‘আমাকে শারীরিকভাবে নিগৃহ করা হয়। এ সময় ওই কক্ষে আরও প্রায় ২০ জন উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অনেকে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

রাজিমুল হক জানান, বৃহস্পতিবার কবি জসীমউদ্‌দীন হলে ছাত্রলীগের একটি কর্মসূচি ছিল। সেখানে না যাওয়ার কারণেই শুক্রবার রাতে তাঁকে সভাপতির কক্ষে ডেকে নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানানোর কারণে এখন সহপাঠীদের দিয়ে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় শিগগিরই হল প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করবেন।

তবে রাজিমুল হককে মারধরের অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা তানভীর। তাঁর ভাষ্য, রাজিমুল হককে শুধু কর্মসূচিতে থাকতে বলেছেন তিনি। তাঁকে কোনো মারধর করা হয়নি। রাকিব তাঁর ‘স্নেহের ছোট ভাই’। তাঁকে কেউ মারধর করে থাকলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।

তানভীর সিকদার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বলে জানা গেছে। জানতে চাইলে সাদ্দাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

এ বিষয়ে জানতে সলিমুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. মজিবুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।