ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজ বুধবার সকাল থেকে নেই মানুষের আনাগোনা। বছরের প্রথম দিনে চারুকলা থেকেও বের হয়নি বড় আকারের কোনো মঙ্গল শোভাযাত্রা। স্বল্প পরিসরে অবশ্য একটি প্রতীকী একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা গতকাল মঙ্গলবার বেরিয়েছে। তবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন জনা তিরিশেক মানুষ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলাচল ও কাজে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার বাংলা নববর্ষ সীমিত পরিসরে প্রতীকী কর্মসূচির মাধ্যমে উদ্যাপিত হয়েছে। প্রতীকী ওই শোভাযাত্রায় চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন মুখোশ ও প্রতীক নিয়ে অনুষদ প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়।
আজ সকালে চারুকলা অনুষদের সামনে গিয়ে দেখা যায়, অনুষদের মূল গেট তালা দেওয়া। একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী সড়ক ঝাড়ু দিচ্ছেন। কিছু গণমাধ্যমকর্মী সেখানে উপস্থিত। তাঁরা ছবি তুলছেন। এ ছাড়া আর কোনো মানুষের যাতায়াত নেই।
প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রসঙ্গে চারুকলা অনুষদের শিক্ষক সুব্রত চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকাল ১০টার দিকে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রাটি হয়। আজ চারুকলা অনুষদে কোনো কর্মসূচি বা অনুষ্ঠান কিছুই নেই। প্রতীকীভাবে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেহেতু মঙ্গল শোভাযাত্রা মঙ্গল কামনায় করা হয়, সেহেতু এমন কোনো পরিস্থিতি না হোক, যেখানে মানুষের ক্ষতি হয়। এ কারণেই বড় আকারে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয়নি। কিন্তু যেহেতু এটি আবার বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, তাই প্রতীকী করে করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গতকালের ওই সংক্ষিপ্ত মঙ্গল শোভাযাত্রায় সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান নেতৃত্ব দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় সহ–উপাচার্য (শিক্ষা)এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত মঙ্গল শোভাযাত্রা। কিন্তু চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে এ বছর পয়লা বৈশাখ উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্যাপন করা সম্ভব হয়নি। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও সংক্ষিপ্তভাবে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও চারুকলা অনুষদকে ধন্যবাদ জানান।
শোভাযাত্রা শেষে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আবহমানকাল থেকে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার যে বর্ণিল উৎসব ও ঐতিহ্য, সেটি অসাম্প্রদায়িক, উদার ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন। নানা বিবেচনায় বাংলা ১৪২৮ গুরুত্ববহ একটি বছর। করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে অত্যন্ত সীমিত পরিসরে নববর্ষকে স্বাগত জানাতে প্রতীকী মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়।