লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর তদন্ত ও বিচার, মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ৮ ব্যক্তির মুক্তি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এখন সচিবালয় সংলগ্ন ডিপিডিসি ভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে আছেন তাঁরা।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মশালমিছিল করতে গেলে শাহবাগে পুলিশের সঙ্গে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় বাম ছাত্রসংগঠনের ৭ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। এ ছাড়া খুলনা থেকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার হন বামপন্থী শ্রমিকনেতা রুহুল আমিন। তাঁরা সবাই এখন কারাগারে আছেন।
তাঁদের মুক্তিসহ ওই তিন দফা দাবিতে আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বামপন্থী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে এলে পুলিশের একটি দল তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশের সঙ্গে কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তির পর বাম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যেতে থাকেন। সচিবালয়সংলগ্ন ডিপিডিসি ভবনের সামনে পুলিশের রমনা জোনের এডিসি হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আগে থেকেই অবস্থান করছিল।
পুলিশের বাধায় মিছিলটি আর এগোতে না পেরে ডিপিডিসি ভবনের সামনে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থানে থেকেই বিক্ষোভ চলছে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর। বিক্ষোভে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন বলেছেন, পুলিশের বাধা সত্ত্বেও তাঁরা তাঁদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি সফল করতে পেরেছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩)। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সোয়া আটটার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পুলিশ তাঁর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাবন্দী অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।