জামিন পেলেন রন হক সিকদার
গুলশান থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকায় নেমেই গ্রেপ্তার হওয়া সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদারকে জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমাম এই আদেশ দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর হোসেন প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এই মামলায় আদালত আসামি রন হক সিকদারকে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।
এর আগে আসামি রন হক সিকদারকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। অন্যদিকে, আসামির পক্ষে জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত রন হক সিকদারের জামিন মঞ্জুর করেন।
বাবার মৃত্যুর কারণে রন হক সিকদার ঢাকায় আসেন। একটি হত্যাচেষ্টার মামলার আসামি হওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
ওই বিভাগের ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম সাকলায়েন প্রথম আলোকে বলেন, এক্সিম ব্যাংকের করা একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলার অপর আসামি রন হক সিকদারের ভাই দিপু হক সিকদার দেশে ফেরেননি। এ কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সিকদার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদারের বিরুদ্ধে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত বছরের ১৯ মে ওই মামলা করা হয়।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, গত ৭ মে রন ও দিপু এক্সিম ব্যাংকের এমডি মুহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত এমডি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসনেকে একটি অ্যাপার্টমেন্টে বন্দী করে রাখেন। তাঁদের গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়।
এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নির্যাতন করা হয়েছে, উল্লেখ করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, পরে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। সিকদার গ্রুপ ব্যাংকটির কাছে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব দিলে এর বিপরীতে গ্রুপের বন্ধকি সম্পত্তি পরিদর্শনে যান ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা। সে সময় এ ঘটনা ঘটে।
মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রুপের এমডির দাবির তুলনায় বন্ধকি সম্পত্তির মূল্য কম ছিল। এরপর ব্যাংক কর্মকর্তাদের একটি অ্যাপার্টমেন্টে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তাঁদের গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয় ও সাদা কাগজে সই নেওয়া হয়।
ঘটনার পর থেকেই মামলার দুই অভিযুক্ত রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার পলাতক রয়েছেন বলেও জানান গুলশান থানার ওই সময়ের ওসি কামরুজ্জামান।