গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ চেয়ে সায়েদাবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সব গাড়িচালককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে নিরাপদ সড়ক ও হাফ পাস আমাদের অধিকারের ব্যানারে এই মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে নিরাপদ সড়ক ও হাফ পাস আমাদের অধিকারের সমন্বয়ক সোহাগী সামিয়ার নেতৃত্বে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে অবস্থান করা চালকদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘আমরা ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। আমরা বলতে চাই, চালকেরা যদি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে না পারেন, তাহলে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আমাদের দেশে চালকেরা ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা গাড়ি চালান। এত পরিশ্রম কোনো মানুষকে সুস্থ রাখতে পারে না। আমরা দাবি করেছি, চালকদের কর্মঘণ্টা ছয় ঘণ্টা করতে হবে। চালকদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে।’
হাফ পাস প্রসঙ্গে সোহাগী সামিয়া বলেন, বাংলাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ পাস সরকারি বিজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফ পাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাসভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে।
সরকারি টার্মিনালগুলোয় চালকদের থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘চালকেরা যেন স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা না দিয়ে কীভাবে আমরা সড়কের নিরাপত্তা দাবি করতে পারি? চালকদের জীবন বিপন্ন অবস্থায় ছেড়ে না দিয়ে তাঁদের মাস শেষে একটা নির্দিষ্ট বেতনকাঠামোয় আনতে হবে।’
চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি জানিয়ে সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘চালকেরা আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যান। চালকদের প্রশিক্ষণের খুব দরকার। রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে যে প্রতিষ্ঠানগুলো গাড়ির লাইসেন্স ও ফিটনেস দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
সড়কের সড়ক দুর্ঘটনার জন্য শুধু চালকেরা দায়ী নন মন্তব্য করেন সোহাগী সামিয়া। তিনি বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা হলে চালকের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন হয়। কিন্তু আমরা বলতে চাই, চালকেরা কষ্টে দিন পার করছেন, চালকেরা প্রতিনিয়ত শোষণের শিকার হচ্ছেন। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র চালকেরা দোষী নন। সেই চালকেরা একটা সিস্টেমের অংশ হলে এ রকম পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। সড়ক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা প্রত্যেকে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সড়কে লুটপাট ও দুর্নীতি জারি রেখেছেন। এ কারণে চাইলেও সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালাতে পারেন না।’