কাউন্সিলর ইরফান সেলিম বরখাস্ত

ইরফান সেলিমকেগ্রেপ্তার করে নিয়ে যান র‌্যাবের সদস্যরা
ফাইল ছবি

নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচরণের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইরফান সেলিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়।

সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিম। তাঁর বিরুদ্ধে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান ও তাঁর স্ত্রীর ওপর হামলা অভিযোগে মামলা রয়েছে। বিদেশি মদ সেবনের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পাশাপাশি অবৈধ ওয়াকিটকি রাখা ও ব্যবহারের দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব আ. ন.ম. ফয়জুল হক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সিটি করপোরেশনের কোন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নৈতিক স্থলনজনিত অপরাধ ও অসদাচরণের অভিযোগে স্থানীয় সরকার ( (সিটি করপোরেশন ) আইন, ২০০৯ এর ১৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করা হলে উক্ত আইনের ধারা ১২ এর উপধারা (১) অনুযায়ী অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে সাময়িক বরখাস্তের বিধান রয়েছে। সেই ক্ষমতাবলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।


গত রোববার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান এবং তাঁর লোকজন। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তাঁর লোকজন।

পরে গতকাল সোমবার সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র‍্যাবের তৎপরতা। গতকাল সকালে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ জানায়, ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকালই আদালত তাঁকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন।

গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় র‍্যাব পুরান ঢাকার বড় কাটরায় হাজি সেলিমের বাড়িতে অভিযান শুরু করে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় অস্ত্র, মাদক, দুরবিন, ওয়াকিটকি, ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি সেটসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। পরে একই এলাকায় আশিক টাওয়ারে পৃথক আরেকটি ভবনে অভিযান চালায় র‍্যাব।

দিনব্যাপী অভিযানকালে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিমকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। আর অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে দেন ছয় মাসের কারাদণ্ড। দুই মামলায় মোট দেড় বছর সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁর। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।