ইরফান ও তাঁর দেহরক্ষী ৩ দিনের রিমান্ডে
নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় সাংসদ হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তাঁর দেহরক্ষী জাহিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার এডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর এ আদেশ দেন।
ইরফান ও জাহিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করে ধানমন্ডি থানার পুলিশ। এই রিমান্ড আবেদনের শুনানির জন্য আজ তাঁদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
একই মামলার আরেক আসামি এ বি সিদ্দিক ওরফে দীপুকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তার আগের দিন ইরফানের গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি পায় পুলিশ।
ইরফান ও জাহিদ ইতিমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত হয়েছেন।
এদিকে ইরফানকে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ এবং অসদাচরণের অভিযোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত রোববার রাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের জেরে পরদিন সোমবার পুরান ঢাকার বড় কাটরায় ইরফানের বাবা সরকারদলীয় সাংসদ হাজি সেলিমের বাড়িতে দিনভর অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফানকে এক বছর কারাদণ্ড ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার কারণে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। ইরফানের দেহরক্ষী জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাস সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে ওই বাড়ি থেকে অস্ত্র, ইয়াবা, ৩৮টি ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে আলাদা মামলা হয়েছে।
রোববার রাতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খান স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে তাঁর মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি।
ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিলেও গাড়ি থেকে নেমে একজন গালিগালাজ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান। এরপর গাড়িটি কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সিগন্যালে দাঁড়ালে ওয়াসিফ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে গিয়ে গাড়িটির জানালায় নক করেন। তখন গাড়ি থেকে লোকজন নেমে ওয়াসিফকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন। তাঁর একটি দাঁত পড়ে যায়। ওই গাড়িতে হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান ও তাঁর লোকজন ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পরদিন সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চার আসামির বিরুদ্ধে এই মামলা হয়। পরে চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।