আরেক ই–কর্মাস শফেটিকের প্রতারণা
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আকাশ নীলের পর এবার সামনে এল শফেটিক নামের আরেকটি কোম্পানির প্রতারণা। বিশাল ছাড়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে মাত্র চার মাসে গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিটি। টাকা নিয়ে পণ্য না পেয়ে গত বুধবার বিকেলে ভুক্তভোগীরা গুলশান থানায় অভিযোগ করতে যান ভুক্তভোগীরা। প্রাথমিক তদন্ত করে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে গুলশান থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, কামরুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেছেন। মামলায় কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিইও ও মালিক আজিজুল হক সানি ও তার স্ত্রীসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। কোম্পানির গুলশান নিকেতন আবাসিক এলাকার ঠিকানায় গিয়ে অফিস বন্ধ পেয়েছে পুলিশ।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ভুক্তভোগীর গ্রাহকেরা জানান, শফেটিক ডটকম নামের ফেসবুক পেজ খুলে গত বছরের মে মাসে ২৭ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয় কোম্পানিটি। মাত্র ২৭ দিনের মধ্যে পণ্য বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় তারা। এতে আকৃষ্ট হয়ে অনেক গ্রাহক বিভিন্ন পণ্যের ফরমাশ বা অর্ডার করেন।
সাহেদ সাদ্দাম তুষার নামের এক গ্রাহক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক লাখ ৩৬ হাজার টাকায় গত অক্টোবর মাসে একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করেছিলাম। এর কয়েক দিন পর অফিসে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান কোম্পানির কর্মকর্তারা। পরে আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আজও আমার পণ্য বুঝে পাইনি।’
মামলার তথ্যানুযায়ী আসামিরা হলেন আজিজুল ইসলাম সানি (২৬), তার বড় ভাই আনিসুজ্জামান হিমেল (৩৫), সানির স্ত্রী ফাতেমা মরিয়াম শ্রেয়া (২৫), মা মিনা বেগম, চাচা জয়নাল আবেদীন, বোরহান উদ্দিন, গুলে নুর মিয়া নাবিল (২৮), ইব্রাহিম খলিল খোকন (৪৮) ও আমিরুল ইসলাম রানা।
মামলায় বাদী কামরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাদীসহ ২৬ জন যুবককে মোটরসাইকেল দেওয়ার নাম করে শফেটিক নামের প্রতিষ্ঠানটি এক কোটি ৯৮ লাখ টাকার ওপরে হাতিয়ে নিয়েছে। তারা এসব টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন সময়ে তাদের ভাড়া করা লোকজন দিয়ে হুমকি দিয়েছেন আজিজুল হক সানি।
পণ্য নেওয়ার জন্য ৪৩ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ টাকা দিয়েছিলেন কামরুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, মাত্র ৩০ দিনের মাথায় তাকে ১৬টি মোটরসাইকেল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ৩০ দিন পেরিয়ে গেলেও পণ্য পাইনি।