আরমানীটোলার আগুন নিয়ন্ত্রণে, নিহত ২
রাজধানীর পুরান ঢাকায় আরমানীটোলায় ছয়তলা ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। ভবনের ভেতর থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ১৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, তাঁদের মধ্যে ১৪ জন ভবনের বাসিন্দা। আর তিনজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। ভবনটির নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক প্রতিবেশী।
এর আগে ১৮ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তিনি ওই ভবনের দারোয়ান। তাঁর নাম রাসেল মিয়া। তাঁর বয়স জানা যায়নি। নিহত আরেকজন নারী। তিনি ওই ভবনের চারতলার বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর নাম জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান জানান, ভোররাত সোয়া তিনটার আগুন লাগে। ১৯টি ইউনিট তিন ঘণ্টার চেষ্টার পর আজ সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। পুরো ভবন তল্লাশি করে আর কাউকে পাওয়া যায়নি। ভবনের বাসিন্দাদের জানালার গ্রিল কেটে বের করে আনা হয়েছে।
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, ধোঁয়ার কারণেই বেশির ভাগ মানুষ অসুস্থ হয়েছেন। আহতেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দুই থেকে তিনজন চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো বোঝা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস তদন্ত কমিটি গঠন করবে।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুন লাগার পর পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় ভবনের নিচতলা। ধীরে ধীরে ধোঁয়া উঠতে থাকে ওপরের দিকে। এতে ওপরের তলার বাসিন্দারা আগুনের বিষয়টি টের পান। এ সময় মানুষজন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও ধোঁয়া ও আগুনের কারণে বের হতে পারেনি। তাঁরা ওপরের দিকে উঠতে থাকেন। তবে ভবনের ছাদ তালাবদ্ধ থাকায় কেউ ওপরে উঠতে পারেননি। বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করতে থাকেন। আটকে পড়া বাসিন্দারা বারান্দা ও জানালা থেকে মোবাইলের আলো জ্বেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।
ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিভিন্ন ফ্লোর থেকে অন্তত ১৩/১৪জনকে ক্রেন ব্যবহার করে বের করে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাঁরা বারান্দার গ্রিল কেটে বাসিন্দাদের উদ্ধার করেন। ভোর পাঁচটার দিকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে একে একে আটকে পড়া সবাইকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ওই ভবনের পাশের একটি ভবনের একজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ওই ভবনের নিচে রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। তাঁর দাবি, আশপাশের প্রায় সব ভবনেই এ ধরনের গুদাম রয়েছে।