অর্থ পাচার মামলায় এনামুল-রুপনের বিচার শুরু
ওয়ারী থানার পৃথক দুটি অর্থ পাচার মামলায় ক্যাসিনো কারবারি বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু, রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫–এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এই আদেশ দেন।
এ ছাড়া একই আদালতে ওয়ারী থানার আরও একটি অর্থ পাচার মামলায় এই দুই সহোদরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তিনজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁরা হলেন র্যাব-৩–এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আখতারুজ্জামান, র্যাব-৩–এর সহকারী উপপরিদর্শক মুকুল মিয়া এবং কর্পোরাল শামীম আহমেদ। এ নিয়ে এই মামলার চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এই মামলায় এনামুল-রুপনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ৫ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলার মোট সাক্ষীর সংখ্যা ২০ জন।
ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শওকত আলম প্রথম আলোকে বলেন, এই আদালতে এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে তিনটি অর্থ পাচার মামলা বিচারাধীন। আজ দুটি অর্থ পাচার মামলায় এনামুল-রুপনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। একটি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি, অন্যটি ২২ ফেব্রুয়ারি।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত ১১ আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন সাত আসামি। তাঁরা হলেন এনামুল হক, রুপন ভূঁইয়া, তুহিন মুন্সি, জয় গোপাল, আবুল কালাম আজাদ, নবী হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। পলাতক আছেন এনামূল ও রুপনের ভাই মেরাজুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, শহিদুল হক ভূঁইয়া ও তাঁদের সহযোগী পাভেল রহমান।
২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাঁদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া থানায় তাঁদের নামে ছয়টি মামলা হয়। পরে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি এনামুল হক ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। আর ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজপত্র পাওয়া যায়। সোনা পাওয়া যায় এক কেজি। এই ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়।
মামলাগুলো তদন্ত করে গত বছরের ২১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
অভিযোগপত্রের তথ্য বলছে, এনামুল বা রুপনই নন, তাঁদের আরও তিন ভাইসহ পাঁচজনে মিলে মতিঝিলে জমজমাট ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তাঁদের হাত ধরেই মতিঝিলের ক্লাবগুলোয় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার প্রসার ঘটে। সিআইডির তদন্তে এসব তথ্য উঠে আসে।
পুরান ঢাকার ক্যাসিনো ব্যবসায়ী এই পাঁচ ভাই হলেন শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মেরাজুল হক ভূঁইয়া, এনামুল হক ভূঁইয়া ও রুপন ভূঁইয়া। তাঁদের বাড়ি ওয়ারীতে। এনামুল হকরা সাত ভাই, এক বোন।