২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

নারী শিক্ষার্থীদের ওপর ১৫ জুলাইয়ের হামলার বিচারের দাবি

নারী শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী সমাবেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ছবি: দীপু মালাকার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সেই হামলার বিচারের দাবিতে সমাবেশ করেছেন রাজধানীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের একদল নারী শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করে হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।

আজ রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই বিপ্লবে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে ‘নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইডেন মহিলা কলেজের সমন্বয়ক শাহিনুর সুমি বলেন, ‘ক্ষমতার পালাবদল হলেও দেশে আমূল পরিবর্তন হয়নি। গণমাধ্যম নারীদের ওপর হামলা নিয়ে কেন কথা বলছে না? ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও পুলিশ “লীগের” বিরুদ্ধে কেন মামলা দায়ের করা হচ্ছে না? কেন তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না? মেয়েদের ভিসি চত্বরে যারা পিটিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।’

ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী মেহেরুন নেসা বলেন, ‘১৫ জুলাই ছাত্রলীগ নামের সন্ত্রাসীরা ছাত্রীদের নির্যাতন-নিপীড়ন করেছে। তারাই এখন ক্লাসে আসছে। স্বাধীন দেশে এ ঘটনার বিচার না হওয়াটা লজ্জার।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী জেবনি সুলতানা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে নারী শিক্ষার্থীরা লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রমণ, নির্যাতন ও হুমকির শিকার হয়েছেন অনেকে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের হয়ে আমলাতন্ত্রের যেসব মানুষ এসবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আমরা তাদেরও বিচার দেখতে চাই। আর কেউ যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়। এই শাস্তিটা যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। নারীদের ওপর অত্যাচার ও হামলার তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে সেগুলো নিয়ে সবাই কথা বলুন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাতে এ ঘটনা নিয়ে কোনো ধরনের অবহেলা না করে। প্রশাসনকে দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

পরিচয় উল্লেখ না করে এক ছাত্রী বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নারীদের অবদান ও নির্যাতিত হওয়ার চিত্র আমরা ভুলতে বসেছি।...প্রশাসনকে আমরা বলব, ফুটেজ দেখে ধরে ধরে তাদের বিচারের আওতায় আনুন।’

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ৷ তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের দুই মাস পেরোতে চললেও নারী শিক্ষার্থীদের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামতে হচ্ছে। তাহলে সরকার ও প্রশাসন কী করছে? ছাত্রীদের ওপর নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের চিহ্নিত করে এখন পর্যন্ত একটি মামলাও করতে পারেনি। প্রশাসনকে বলব, সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করুন। হামলাকারীদের সঙ্গে আমরা কেউ ক্লাস করতে প্রস্তুত নই।’

নারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের হামলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, ১৫ জুলাই ২০২৪
ছবি : প্রথম আলো
আরও পড়ুন

‘নারী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে নারী সমাবেশের পর ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক নেতা জাহিদ আহসান এই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন। এই সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো ৫ জুলাইসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ফ্যাসিবাদী শাসনামলের বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা পরিচালিত হামলার বিচার ও হামলাকারীদের ছাত্রত্ব বাতিল। ‘জুলাই গণহত্যায়’ সমর্থনকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা। এবং ফ্যাসিবাদী সিন্ডিকেট বিলুপ্ত করে নতুন সিন্ডিকেট গঠন৷