পূজামণ্ডপ মনে হচ্ছে না, দলীয় কার্যালয় বলে মনে হচ্ছে

শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দিরে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। ঢাকা, ০৯ অক্টোবরছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও শ্রী মা আনন্দময়ী আশ্রমে দুর্গাপূজার মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা। পরিদর্শন শেষে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আজকে রমনা কালীমন্দিরে এসে এটিকে কোনো পূজামণ্ডপ মনে হচ্ছে না। এটিকে একটি দলীয় কার্যালয় বলে মনে হচ্ছে।’

আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন রমনা কালীমন্দিরে আসেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে প্রথমে মন্দিরের পরিচালনা পরিষদের কার্যালয়ে যান তাঁরা। সেখানে এই মন্দিরের পূজা পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিনসহ অন্য সদস্যরা।

রমনা কালীমন্দিরে দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠীর মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের উদ্বোধন উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে মঞ্চে আজ সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঞ্চ থেকে মাইকে বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ছাত্রদল ও যুবদলের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়া হয়।

নাগরিক কমিটির সদস্যরা যখন মন্দিরে আসেন, তখনো রুহুল কবির রিজভী সেখানে এসে পৌঁছাননি। পূজার আয়োজনে দলীয় নেতাদের অতিথি করার বিষয়টি নিয়ে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী শুরু থেকেই বিরক্তি প্রদর্শন করছিলেন। একপর্যায়ে পূজা উদ্‌যাপন কমিটির এক নেতা তাঁকে মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য দেওয়ার অনুরোধ জানালে নাসীরুদ্দীন তাতে রাজি হননি।

পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকে রমনা কালীমন্দিরে এসে এটিকে কোনো পূজামণ্ডপ মনে হচ্ছে না। এটিকে একটা দলীয় কার্যালয় বলে মনে হচ্ছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দখলের যে রাজনীতি বাংলাদেশে চলমান, এ ধরনের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের আহ্বান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ধর্মীয় জায়গাটা ছেড়ে দিন।’

গত ১৫ বছর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন নাসীরুদ্দীন। তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতা আওয়ামী অসুরদের দমন করেছে; কিন্তু ফ্যাসিবাদের অসুর এখনো সমাজে বিরাজমান। ছাত্র–জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অসুরকে দমন করতে হবে। গত ১৫ বছর পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলাগুলোর হামলাকারী, ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের দ্রুত বিচার হতে হবে।