সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমের নিন্দা ও বাতিলের দাবি
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। আগামী জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সবাইকে সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার বাধ্যবাধকতা থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ইউট্যাব বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত।
পাশাপাশি সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে আজ সোমবার মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
গত বছর সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ প্রণয়ন করা হয়। গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর থেকে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার চাকরিতে যাঁরা নতুন যোগ দেবেন, তাঁরা বিদ্যমান ব্যবস্থার মতো আর অবসরোত্তর পেনশন-সুবিধা পাবেন না। তার পরিবর্তে নতুনদের বাধ্যতামূলক সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করা হবে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে ইউট্যাবের সভাপতি এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব মো. মোর্শেদ হাসান খান আজ সংগঠনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি পাঠান।
বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা নতুন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে পুরোনোদের সঙ্গে তাঁদের বৈষম্য তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অবসরের পর শিক্ষকেরা বর্তমান ব্যবস্থার মতো এককালীন অর্থ পাবেন না। অন্যদিকে সরকারি কর্মচারীরা এককালীন অর্থপ্রাপ্তির সুবিধার পাশাপাশি মাসিক ভাতা পাবেন। এটি বৈষম্যমূলক এবং অন্যায়।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘প্রত্যয়’ স্কিম কার্যকর না করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে মানববন্ধন করে বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্য পরিষদ ও কর্মচারী সমিতির নেতারা। সেখানে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতির নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিমটি বৈষম্যমূলক। এই স্কিম বাতিল করে আগের পেনশনব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা অনুরোধ জানাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্মচারীদের স্বতন্ত্র পে-স্কেল দেওয়ার কথা বলেছিলেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘সর্বজনীন পেনশন বাতিল করে আগের পেনশনব্যবস্থা বহাল রাখতে হবে। আমরা সবাই বৈষম্যের প্রতিবাদ জানাই। দাবি মানা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন করতে বাধ্য হব।’
উল্লেখ্য, প্রত্যয় স্কিম নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রত্যয় স্কিম চালুর ফলে বিদ্যমান কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হবে না; বরং তাঁদের বিদ্যমান পেনশন বা আনুতোষিক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকবে। যাঁদের ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি অবশিষ্ট আছে, তাঁরা আগ্রহ প্রকাশ করলে প্রত্যয় স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।