মিনিটের ব্যবধানে রক্ষা পেলেন এক ভাই, আরেক ভাই হাসপাতালে
জাহাঙ্গীর হোসেন ও খলিলুর রহমান দুই ভাই। দুজনই একটি বীজ উৎপাদন কোম্পানিতে চাকরি করেন। দুই ভাই মিলে গতকাল মঙ্গলবার সিদ্দিকবাজারের বিধ্বস্ত ভবনটিতে থাকা একটি কুরিয়ার সার্ভিসে মালামাল কুরিয়ার করতে যান। বড় ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন গতকাল কুরিয়ারের জন্য মালামাল জমা দিয়ে ওই ভবন থেকে বের হয়ে যান।
আর ছোট ভাই খলিলুর রহমান ক্যাশমেমো নিতে সেখানে রয়ে যান। মিনিটখানেক হয় জাহাঙ্গীর ওই ভবন থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন; সঙ্গে সঙ্গে বিকট আওয়াজ হলো। ভয়ে জাহাঙ্গীর মাটিতে শুয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মনে হলো, ভাই কোথায়?
জাহাঙ্গীরের ভাই খলিল এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। খলিল গতকালের বিস্ফোরণে আহত হন। জাহাঙ্গীর জানান, বিকেলে তাঁরা দুজনে মালামাল বুকিংয়ের জন্য কুরিয়ার সার্ভিসের কার্যালয়ে যান। কাজ শেষ হয়ে যায়। তিনি নিচে যাচ্ছেন বলে বের হন। ভাই ক্যাশমেমো নিয়ে আসবেন। জাহাঙ্গীর নিচে নেমে সড়কে দাঁড়াতেই বিস্ফোরণ ঘটে। চারদিকে মানুষকে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন তিনি খলিলকে খুঁজতে থাকেন।
তাঁদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে, তাঁরা একসঙ্গে গুলিস্তানে থাকেন। গতকাল দুর্ঘটনার পর যখন ভাইকে দিগ্বিদিক খুঁজছিলেন, তখনই একজন জাহাঙ্গীরকে ফোন করে জানান, তাঁর ভাইকে হাসপাতালে নিতে হবে। ভাইয়ের কাছে গিয়ে দেখেন, গা–ভর্তি কাচের টুকরা। চিকিৎসা চলছে, তবে খলিল ব্যথায় কাতরাচ্ছেন বলে জানান বড় ভাই।
দুই ভাই বেঁচে গেলেও বিস্ফোরণের ভয়াবহতা জাহাঙ্গীরের চোখেমুখে। সিদ্দিকবাজারের নর্থ সাউথ রোডের সাততলা ভবনটিতে বিস্ফোরণের পর এখন পর্যন্ত ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে। বিধ্বস্ত ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উদ্ধারকাজের জন্য ভেতরে ঢুকতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ আবার শুরু হয়েছে উদ্ধারের কাজ। এর অনেক আগে থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান নিখোঁজ একাধিক ব্যক্তির স্বজনেরা।