সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির আয়োজনে পিঠা উৎসব
টানা দ্বিতীয়বারের মতো পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। উৎসবকে ঘিরে আজ সোমবার বিকেলে ডিএসসিসির নগর ভবনের ফোয়ারা চত্বরসংলগ্ন প্রাঙ্গণ মিলনমেলায় পরিণত হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বিকেলে এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। করপোরেশনের ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক স্থায়ী কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উৎসবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। মন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রীতির জন্য আমাদের বিভিন্ন আঙ্গিকে কাজ করতে হবে। জনগণের উন্নয়নের জন্য সারা দিন যেমন কাজ করতে হবে, তেমনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রায় হারিয়ে যেতে বসা শিল্প-সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।’
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, পিঠা উৎসবের মাধ্যমে সবাইকে একসঙ্গে এক জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঢাকার যে ঐতিহ্য আছে, সেই ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে এ ধরনের মিলনমেলার আয়োজন করায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে ধন্যবাদ।
পিঠা উৎসবে মোট ১৫টি স্টলে বাহারি স্বাদের পিঠা ছিল। উৎসবের আমন্ত্রিত অতিথিরা কাঁঠাল পিঠা, কুলি পিঠা (ঝাল), সুচি পিঠা (ডিম), বিবিখানা পিঠা, মোর্শেদা পিঠা, চিতই পিঠা (ভিজা), ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, পোয়া পিঠা, মেরু পিঠা (মিষ্টি), চুই পিঠা-ডাবের পুডিং, ছড়া পিঠা, মেরু পিঠা (মিষ্টি), মিষ্টি বাখরখানি, সেদ্ধ পুলি পিঠা, খেজুরের রসের পিঠা, মুগ ডালের পিঠা, মাংসের পিঠা, ইলিশ মাছের পিঠা, চিতই পিঠা, মেরা পিঠা, ডাবের পিঠা, চাপটি পিঠা, নকশি পিঠা, দুধকলি, চটপটি, তেলের পিঠা, মাল পিঠা, ফুচকা, বাখরখানি, লুচি ও ছিটা রুটির মতো শতাধিক রকমের পিঠা ছিল। আরও ছিল গরুর মাংস, হাঁসের মাংস, ইরানি কাবাব, ক্রাম চপ, টাকি পুরি ও মুরগি পুরি।
উৎসবের উদ্বোধক ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘কর্মচাঞ্চল্যের পাশাপাশি আমাদের সংস্কৃতিকে সবার কাছে উপস্থাপন করতে এই আয়োজন আমরা অব্যাহত রাখব। সংস্কৃতির বড় বিষয়ই হলো উৎসব ও আনন্দ। তাই আজ এখানে সমবেত সবাই আমরা আনন্দ করব।’
মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে এ ধরনের উদ্যোগ অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম। মেয়র বলেন, পাড়া-মহল্লায় পিঠা উৎসবের মতো নানা ধরনের উৎসব যত বেশি আয়োজন করা যাবে, তত বেশি মাদকমুক্ত সমাজ গড়া যাবে।
উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ বক্তব্য দেন।
ডিএসসিসি মেয়রের স্ত্রী আফরিন তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আওলাদ হোসেন, ঢাকা-৫ আসনের মশিউর রহমান মোল্লা, ঢাকা-৭ আসনের মোহাম্মদ সোলায়মান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদি হাসান চৌধুরী, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
পিঠা উৎসবে নগর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা লোকজ গান পরিবেশন করেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই উৎসব চলে।